।।একটি গুপ্ত কাহিনী ।।
---প্রলয় রায়
লক্ষ্য ছিল না বড় বাজি
চাই তার একটু ছোট্ট পুঁজি
সঙ্গী সাথি নাইকো আজি
একাই তবু যেতে রাজি।
টুক করে তাই ঢুকেছিল
ছোট একটা সিঁদ কেটে
ঝুপ করে সেথা পড়েছিল
নেংটি একটা ঘাড়ে পিঠে!
ঘষ্টে ঘষ্টে ধীরে ধীরে
ঢুকেছে সটান রান্না ঘরে।
ঢুকলি যখন ঢুকছিস ওরে
ঢুকলি শেষে রান্না ঘরে।
আঁচারের গন্ধ আসছে ক্ষন
জিভেতে জল ভিজছে মন
পেটে মারছে ছুঁচোর ডন।
ভরলে পেট তবেই বাঁচন।
ফ্রিজ টাকে তো খুলেই মাইরি
চোখ কপালে বলিহারি।
কষা মাংস গোটা গোটা
ঠাসিতে দিল মুখে সেটা
বিরিয়ানির ম ম গন্ধে
ভরলো পেট অতি আনন্দে।
দিন দুয়েকের খালি পেট
ঢেকুর তুলে তৃপ্তির ভেট।
খিদের চোটে মাথা গরম
খেল লুচি আলুর দম
অমনি শালা! দুনিয়ার ক্লান্তি!
লেগেছে চোখ- ঘুমিয়ে শান্তি..
ঘুমাবি ঘুমা নাক ডাকা ঘুম
চারদিকেতে রাত্রি নিঝুম।
ভাঙলো ঘুম শেষ ভোরে
কাজলা বুড়ির চিল চিৎকারে ।
চ্যাঁচানো বুড়ির গলাটা বুঝি
বড্ড..যেন চেনা লাগে।
যা শালা..এ তো দেখি
ছুটকি বুড়ি--ছোট্ট সাথি
যার জন্য সারজীবন
কাটিয়ে দিলাম একা-
বুড়িও দেখে চিনতে পারে
মুখের আওয়াজ বোবা।
ভাগ্যিস সব উঠেনি এখন
গুষ্টি সুদ্ধ লোকজন
তুই ও বুড়ি রইলি পড়ি
একাকিনী আমার মতন ।
বাবার সাথে রাগের মাথায়
ছেড়েছিলাম ঘর
তারপরেতে মাথায় আমার
হল কঠিন ব্যামো
ছিলাম জেলে হাসপাতালে
বহু বছর ধরে
কোথায় থাকি কি বা খায়
কিছুই জানিনা
খুঁজে ছিলাম তোকে আমি
সুস্থ হবার পরে।
বেঁচে আছি কেমনে আমি
অবাক হয়ে যায়
এমন দলে পড়েছি আজ
ফিরতে নাহি পারি।
নিজের কথা পালটে বলে
কেমনে তুমি এমনি হলে?
বুড়ীর চোখে অশ্রু তখন
ফুঁপিয়ে কাঁদে একি জ্বলন।
বুড়ি দোষে দেবতারে -হে ভগবান
কেমন করে বাঁচি এমন?
বাপ মা গেছে বিদায় নিয়ে
হল অনেকদিন
ভায়েরা সব ভিন্ন হলে
ব্রাত্য আমি সারাদিন।
কাজ নিয়েছি এই ঘরেতে
নিজের লোকের মত
তুমি-জেদের বশে দেশ না ছাড়লে
আজ কি এমন হোত!
নিজেও ডুবে ডোবালে আমায়
সারাজীবন একা..
বুড়ো চোরের মাথা নীচু
এক্কেবারে কাঁচুমাচু।
চোখের জলে দুজনেরই
বাতাস হল ভারী
ভোরার আলো ফুটলো বলে
বুড়ো বিদায় খোঁজে
বুড়ি তখন কষ্ট চেপে - ইষ্ট জপে
বিদায় বেলায় হাতটি ধরে
মাথায় ছুয়ে আবেগ ভরে কাঁদে
দরজা খুলে দেয়--
ভোরের রাতে অশ্রুপাতে
শুভ বিদায় ঘটে।
---++++++++++++++---