ছোটবেলায় শাহিদ আমি আর লিটন খুব ভালো বন্ধু ছিলাম।
শাহিদের আদি বাড়ি পাকিস্থান, আমার এপার বাংলা আর লিটনের ওপার বাংলা।
তিন বন্ধুর একটাই দোষ ছিলো। যতবার ঠিক করতাম ভারতবর্ষের ম্যাপ আঁকবো,আঁকতে যেতাম,ততবার ভুল করতাম।
ভুল করতাম সীমানা নির্ণয়ে।কখনো ভুলে যেতাম পাকিস্তানের সীমানা দিতে,আবার কখনো বাংলাদেশের।
আর তাতেই যত গোলযোগ।
লাল কালিতে শিক্ষক মহাশয় বুঝিয়ে দিতেন সে কথা।
আর লাল মানেই তো বিপদ,লাল মানেই তো রক্ত, লাল মানেই বিপ্লবীদের সংগ্রাম।লাল মানেই সেনা জওয়ানের পতাকা জড়ানো লাশ।
যত বড় হয়েছি বুঝতে শিখেছি আমরা আলাদা। প্রতিটা দেশ নিজেকে বেঁধেছে একটা সীমানায়। আমরাও নিজেদেরকে বেঁধেছি একইভাবে।কখনো ধর্মের সীমানায়, কখনো মানচিত্রের।
সেই সীমানা লঙ্ঘনের অধিকার নেই কারও।এমন কি একটা পেন্সিলের দাগেরও না।
আর যদি কেউ ভুল করে সেই সীমানায় ঢুকে পড়ে তাহলেই যুদ্ধ,রক্তারক্তি, বোমা,গুলি, কামানের গর্জন, লাল দাগ।
এত বড়ো হয়ে এখনও মাঝে মাঝে ভুল করি,তবে সজ্ঞানে নয়, স্বপ্নে।
মিলেমিশে সব করে ফেলি একাকার।
আর স্বপ্ন ভাঙলেই ফিরে আসি বাস্তবে..ভয়ে ভয়ে নিজের ভুল শুধরে নিই তৎক্ষণাৎ।
স্বপ্ন দেখতে যে ভালোবাসি না তা নয়।তবে তার চেয়ে অনেকবেশি ভয় পাই-লাল দাগে।