দীর্ঘক্ষণ সবাই আমরা অধীর অপেক্ষায় ...
না, না , হেমন্তের পাতা ঝরার শব্দ শুনবো বলে নয় ...
অস্তগামী সূর্যের লাল আলো বিলীন হওয়ার বিবর্তন দেখব বলে নয় ...,
মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের শুভ পদার্পণের প্রতীক্ষায় আজ আমরা ...;
আয়োজিত শিক্ষা বিষয়ক কনভেনশনের উদ্বোধক যে তিনি –ই।
জীবনে এমন অনেক দিন গেছে... অপেক্ষায় থেকেছি ...
কোনও বন্ধুর জন্য কিম্বা অন্য কারও জন্য ...;
কিন্তু এত বিষণ্ণ ,দ্যোতনাহীন প্রতীক্ষার সন্মুখীন হই নি কখনও ।
অপেক্ষা বা প্রতীক্ষা যা-ই বলি না কেন ,কেউ কেউ আবার অতীব ব্যগ্র,...
প্রতীক্ষার ব্যগ্রতার নিরিখে উপস্থিত উৎকণ্ঠিতদের মধ্যে
প্রথম সারিতে আছেন প্রধানত কিছু ভেকধারী সমাজসেবী , হপ্তাভোগী পুলিশ,
স্ব –আমন্ত্রিত ‘ পার্টির’ কিছু উচ্চাকাঙ্ক্ষী লোকজন ... মূল্যবোধহীন আঁতেল মার্কা
কিছু বিদ্বজন ... এছাড়াও আছেন রোবট সম শিরদাঁড়াহীন আমলাবর্গ ।
অনেকেরই মোবাইল ফোন কানে... সকলেই বুঝি মন্ত্রীর সাথে কথা বলছেন!
আমি জানি, ক্ষণিক পরেই মন্ত্রীমশাই এর আগমন ঘটবে ... মঞ্চে , মন্ত্রী মশাইয়ের
‘লক্ষণ-গণ্ডি ‘ র ভিতরে যাবার এক অঘোষিত প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যাবে ...।
তারপর, অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়, শিক্ষার গুরুত্ব ও মূল্যায়ন
বিষয়ক নাতিদীর্ঘ বক্তব্য রাখবেন ...করতালিতে ফেটে পড়বে সারা হল ঘর ...!
প্রবল অনিচ্ছাসত্বেও, হাততালি পর্বে অংশগ্রহণ করতে হবে আমাকেও ...
বন্ধকীকৃত শিরদাঁড়াটা ছাড়াতে পারিনি তো ...ইচ্ছের স্বাধীনতা তাই আজও অধরা ।
দিনান্তে , একান্ত গোপনে , হয়ত আবার আমি গানও ধরব ...
“ দোষ কারও নয় গো মা “ ...। কাকে আর দোষ দেব বল, .
আমরাই তো দায়ভার অর্পণ করেছি এই অর্ধ – শিক্ষিতলোকগুলির হাতে...
যাদের লিঙ্গ আছে হৃদয় নেই ...দাঁত আছে ওষ্ঠ নেই ...।হ্যাঁ ,এদের ওপরই
ভার দেওয়া হয়েছে সমাজের , রাষ্ট্রের ...এদের ওপরই ভার দেওয়া হয়েছে সভ্যতার ।
দিনান্তে , ঘুমের ঘোরে হলেও কোন দিন যদি বলতে পারতাম ,”রাজা, তোর কাপড় কৈ ?” ...
নিজেকেও ক্ষমার যোগ্য করে তুলতে পারতাম ...।
আমি জানি , আমার এই কথাগুলি যদি ঐ মুখোশধারি বিদ্বজনেরা শুনতে পায় ...
তবে ওঁরা বলে উঠবেন , “ মানুষকে এত ক্ষুদ্রার্থে নেবেন না ...” ।
না, না, সবাই শুনে নাও ...আমি কাউকে কিছু বলিনি ... কাউকে বলব ও না ...
উদ্ভিদের মৌনতা নিয়ে আমি যে শপথ নিয়েছি ...
আমি মানুষের পক্ষে ,মানুষের সঙ্গে ... আমি মানুষের জন্য ।।
@ প্রবীর দে
১৭.১১.২০১৮