ফর্টিস হাসপাতালে বসে আছি কলকাতার আনন্দপুরে। আলো ঝলমলে ঝকঝকে চারিপাশ।
কর্পোরেট হসপিটাল না কি এরকমই হয়!
লম্বা ডিগ্ৰীধারী অনেক ডাক্তার আসছেন যাচ্ছেন,
অনেকেই বিলাত ফেরত।
রোগীদের ভিড়, বসে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকেই।
অনন্ত প্রতীক্ষা ঈশ্বরের জন্য।
বসে বসে হঠাৎ দেখি একজন হাতে পা নিয়ে হাঁটছেন। কেউ কেউ চাকাযুক্ত চেয়ার নিয়ে চলমান। চিকিৎসা শাস্ত্রে না কি এখন উদ্ভাবনার চমৎকারিত্ব! বিস্ময় জাগে মনে। রোবট সার্জারির পর এখন না কি চাটজিপিটি প্রবেশ করেছে চিকিৎসা পরিষেবায়।
মানুষের শরীরে অগণিত রোগের বাসা, নিত্যদিন নতুন নতুন রোগ আবিষ্কার হচ্ছে। মুনি ঋষিরা বলে গেছেন, উপনিষদেও বলা আছে জরা মৃত্যু মানুষের অবধারিত অনিবার্য পরিণতি। সৃষ্টির নিয়ম লঙ্ঘনের ক্ষমতা তো এখনও কেউ অর্জন করতে পারেনি।
সবাইকে সবকিছু ছেড়ে একদিন যেতেই হবে অনন্তের কাছে, পরম আত্মীয় পরমাত্মার কাছে। অহেতুক ভয় কেন মনে মনে, মনের গভীরে?
সারা শরীরে ছড়িয়ে আছে স্নায়ুর জাল, রক্ত প্রবাহের সূক্ষ্ম সরু নদীনালা বইছে উজান ভাটিতে নিরলস নিরন্তর, সদাজাগ্ৰত হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস।
রক্তের রকমারি পরীক্ষা থেকে ডাক্তাররা বুঝে নেন শরীরের হালচাল। নীরব পরীক্ষাগারে রোগনির্ণয়ের কত ধরণের যন্ত্রপাতির আয়োজন!
আজ মে দিবস। দেখি স্বাস্থ্যকর্মীরা হাসিমুখে পরিষেবা দিচ্ছেন। আজ তাঁদের ছুটি নেই। মিটিং মিছিল বা শ্রমিক দিবসের কোনো সমাবেশে যাওয়ার তাঁদের সময় নেই। তাঁরাই তো ছিলেন কোভিড যোদ্ধা কিছুদিন আগে। বাঁচিয়েছিলেন লক্ষ কোটি প্রাণ।
মে দিবসে তাঁদের মুখে কোনো স্লোগান নেই, ফেসবুকে হোয়াটসঅ্যাপে কোনো পোষ্ট নেই।
মে দিবসে তাঁদেরকে কুর্ণিশ।