ভাদ্র শেষের এক তপ্ত দুপুর গড়িয়ে বিকেল, দাদু নাতির গল্পে শৈশবের নানা রঙের দিনগুলি জেগে উঠে এক এক করে, নিমগ্ন প্রসন্ন দু'টি মন ভেসে বেড়ায় শান্ত স্নিগ্ধ মুগ্ধ পরিবেশে।
কয়েক যুগ আগের কথা, মন ফিরে যায় বারবার সেথা।
সন্ধ্যার আঁধার নেমে আসে ধীরে ধীরে, প্রদীপ জ্বালিয়ে শঙ্খ নিনাদে তৎপর গৃহলক্ষ্মী মা, মনের গভীরে পূতাগ্নি আর শব্দব্রহ্ম মিলে শুদ্ধ চৈতন্যের খেলা।
শীতলপাটিতে মাঝখানে লন্ঠন, চারিধারে বসে ভাইবোন ডুবে আছে যেন নিবিড় অধ্যয়ন। খুনসুটি, কলহ কোলাহল আর বদমায়েশি নিরন্তর, পড়াশুনা যেন অসংগত অবান্তর। অনাবিল দুষ্টমির আনন্দ হৃদয়ে আছে যেন চিরন্তন।
গ্ৰীষ্মকালে তালপাতার হাতপাখা, বড়দের হাওয়া দেয় ছোটরা, সে ছিল যেন দাদাগিরির এক ভীষণ জমানা!
জীবনযাপন ও দুনিয়া, আজকাল পাল্টে গেছে অনেকটা, এসেছে আধুনিকতার স্বাচ্ছন্দ্য সুবিধা।
তবু কখনও কখনও না জানিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে বিদ্যুৎ কোথায় যে চলে যায়, নেমে আসে ঘরে বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার।
দুঃসহ দাবদাহে পুড়ছে সবাই, স্থৈর্য্য ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে জনমানসে উন্মত্ততার গাঢ় ছায়া যেন নেমে আসছে, সভা সমাবেশে উদ্বেলিত অসহায় জনতার নিস্ফল হাহাকার মন্দ্রিছে চারিপাশে।
দূরে বহুদূরে জনতা অবাক নয়নে তাকিয়ে দেখে এক জনপ্রতিনিধির এক হাতে একটি লন্ঠন, অপর হাতে একটি হাতপাখা।
চমকে কুন্ঠিত হয় কি রাজা?
মনে পড়ে শুধু শৈশবের দুষ্টমির কথা!