একদা এক পথিক প্রবর দীর্ঘ সফরে ছিলেন,
সাথে ছিল তাঁর একটি ঘোড়া ও ছাও (ছাবক),
সফরে তিনি পাড়ি দিচ্ছিলেন কমলগঞ্জের গঞ্জ,
সম্ভবত, মঞ্জিল ছিল তার উত্তর ত্রিপুরার পুর,
দীর্ঘ পথ পরিক্রমে ক্লান্ত ঘোড়া ও ছাও,
ঠিক মতো খাবার ও যত্নআত্তি না পেয়ে, পেয়ে,
ঘোড়া দুটি অনেকটায় দূর্বল আর ক্ষীন।
পথিক প্রবর বিশ্রাম নিতেন পথের বাঁকে,
ছাতার মত মেলে থাকা পথতরুর ছায়ে।
তখন কিছুটা সময়, ছেড়ে দিতেন রাস্তার পাশ,  
খানিক সময় খেতে পেতেন তারা ঘাস।
ক্ষনিক পরে যেতো আবার রোদেলা পথে,
একই ভাবে একই রুটিন প্রতিদিন, প্রতি রাত,
দিনের পরে দিনমনি, চুপটি মেরে যখন যেত,
তখন তারা আশ্রয় নিতো, পাশের কোন লোকালয়ে,
ভোর হলে পর ছুটতেন আবার মঞ্জিল পানে।
কিন্তু এবার তাঁর সংগী ঘোড়া রোগাক্রান্ত,
পথিক তখন কমলগঞ্জের একটি গ্রামে,
হঠাৎ করে হাড় কাঁপুনি এক জ্ব্বর এলো,
খানিক পরে ছাও ঘোড়াটি মারা গেল।
পথিক তখন শোকে কাতর, যেন এক পাথর,
শেষাবধি শবটি ফেলেই, ধুধু পথে গেলেন।
ভাগ্য যাকে পিছু টানে, সহজে কি ছাড়ে?
কিছুদূর যেতে না যেতেই ঘোড়াটিও গেল মরে।
সব হারিয়ে পথিক প্রবর শোকে পাথর হলো,
পথিকের কষ্ট দেখে এলাকাবাসীও কাতর।
তারা তাঁকে অনেক বুঝিয়ে, এগিয়ে দিল পথে,
পথিক প্রবর কিছুদূর হেটে, কান্না করে বসে,
ছায়া ছড়ানো মায়া ঝড়ানো এক গাছের ছায়ে,
পথিকের এ শোকে,  এলাকাবাসীও ঝোঁকে,
অনেক দিন পর্যন্ত এ শোকগাঁথা মানুষের মুখে।
জীবনের কি নিয়তি, ঘোড়া মরার স্থান দুটি
আর পথিকের কান্নার স্থানটি আজো অমর,
'ছাও ঘোড়ামারা', 'ঘোড়ামারা' আর 'কান্দিগাঁও'
নাম ধারণ করে, ইতিহাসের পাতায় জলজল করে।
বেদনা বিধোর দূর অতীতের অমর সাক্ষী হয়ে।