একে বেকে জাগরণী গান গেয়ে যায়,
আমার প্রাণের ধলাই নদী।
টিলাময় শক্ত পাহাড়, সরোবর,
ঘন লোকালয় কিংবা সমতল মাঠ,
চলন্ত পথে যাকে পায় তাকে
বলে যাই শুধু জীবনেরই জয়গান।
হোক না সে শ্রমজীবি মানুষ কৃষক, কুলি,
বাগান শ্রমিক, দিনমজুর বা কামার, কুমার।
হোক সে মানুষ আদিবাসী, বনবাসী,
উপজাতি কিংবা বৃহত্তর জনগোষ্ঠী।
একে বেকে জাগরণী গান গেয়ে যায়,
আমার প্রাণের ধলাই নদী।
পাহাড় চূড়া থেকে দ্রুত নেমে এসে
সমতলে বহতা ঐ শ্রোত ধারা,
মানুষেরই হিতে সদা অকাতরে
বিলিয়ে দে’য়ার এক কঠিন প্রত্যয় নিয়ে,
দুই ধারে ধেয়ে আসা ছড়া কিংম্বা
জল ধারা, মায়ের মমতায় পরম আদরে
দুই হাতে বুকে ধারণ করে নিয়ে,
কখনো ধীরলয়ে, কখনো দ্রুতালয়ে।
একে বেকে জাগরণী গান গেয়ে যায়,
আমার প্রাণের ধলাই নদী।
টিলাময় শক্ত পাহাড়ের ঐ মৃত্তিকায়
কঠিন সংগ্রাম করে নিচে নেমে আসা
শ্রোত ধারা, চলার পথে যত পলি
মায়াবী পরশে সিক্ত আলিঙ্গনে
বুকে ভরে সমতলে নিয়ে এসে,
নদীর দুই পার অকাতরে প্লাবিত করে,
সব পলি বিলিয়ে দিয়ে, দুই পার ভেঙ্গে
প্রতিদানে উর্বর মৃত্তিকায় ভরে দিয়ে,
নদী পয়ন্তি আর সিকস্তি সৃষ্টি করে,
চলে সে যায় দ্রুতালয়ে ভাটির পথে।