চরিত্রে পশু আর আকৃতির মানুষ নই শুধু আমি
অবয়বে ও গুণাবলীতে এখন আমি পূর্ণ মানুষ,
জন্মগতভাবে মানুষ-চরিত্রেও মানুষ-নই ফানুশ।
মানুষ চরিত্রের সবটুকু, দিয়েছে আমাকে দহন
এটা নহে কোন মিথ্যার-ছলনার, সাধন-কহন,
ঘাত-প্রতিঘাতের এটা-সঞ্চিত অনুভূতির গহন,
ভালোবাসার নদীতে তাই, দহন আমার বাহন।
এ দহন করেছে অঙ্গার, আমার তন-আমার মন
ভেঙ্গে করেছে দহন, অণু-পরমাণু আর নিউট্রণ,
অঙ্গার করেছে আমার সমস্ত কোষ, নিউক্লিয়াস
রাখেনি বাকি ডিএনএ, ক্রোমোজম জিনিয়াস।
পুড়িয়েছে যেমনি আমায় যত অভাবের দাবানল
তেমনি পুড়িয়েছে, শঠ-নষ্ট আর প্রতারকের দল,
মসৃণ করে অমসৃণ, পেতেছে অজ্ঞেয় গ্যাড়াকল।
নিসর্গের নৈসর্গিক প্রলয় দেখেছি-দহনে দহে’ছি
মানুষ সৃষ্ট প্রলয়ের, ভয়াবহ নির্মমতাকে দেখেছি,
অর্ণবীর জলপাত্র সম, মানবের রক্তবন্যা সয়েছি
নয় অগ্নিঝরা স্ফূলিঙ্গ-দহনকে শুধু ভালোবেসেছি।
মেদিনীর বুকে প্রকীর্ণ লাশ-কোন্ বর্বর অভিলাষ
লাশের পর ফেলে লাশ, হতে চায় ওরা অবিনাশ,
খুনি শুধু নিজের ক্ষতি নয়, করছে সৃষ্টির সর্বনাশ
সশঙ্ক দহনে সংকুচিত কণ্ঠনালী, থামে নিঃশ্বাস।
এ নয় কোনো অগ্নি দহন, এ আমার হৃদয় দহন
অনাচার সহনে সৃষ্টি এ দহন, বলে মোর মনন,
পূত-পবিত্র, সচ্ছ নির্মল, দহনের এই অবগাহন।
আমি কোনো গঙ্গা জলে-ডুব সাতার দিয়ে নয়
সাধকের কোনো তন্ত্র-মন্ত্র-ঝাড় ফুঁক দিয়ে নয়,
নয় কারো মৃত্যু পরোয়ানার-অন্তিম বজ্র হুঙ্কারে
অঢেল অর্থ, বা নয় কোনো ভোগের অভিসারে,
পশুত্ব দহনে পূর্ণ মানুষে-মিলে মিশে অবিনাশে
দহনকে হেসে ভালোবেসে, বুক ভরা বিশ্বাসে।
মানুষকে এবং তার হাসিকে আমি ভালোবাসি
অর্থ-সম্পদ ক্ষমতা নয়, মানবতা ভালোবাসি,
ছেড়ে দুনিয়াবী স্বার্থ তঞ্চ-দহনকে ভালোবাসি,
আমি শান্তি পিয়াসী-তাই দহনকে ভালোবাসি।
যদি আমায় ছেড়ে যায় কোনো বন্ধু, তবে যাক
আমায় ছেড়ে নিকটজন যদি পায় শান্তি, পাক্,
তিলে তিলে যদি অভাব উৎপীড়ন খায়, খাক,
আমায় ছেড়ে সবাই গেলেও, হবোনা অবাক।
যদিও বিশেষ বিশেষণে বিশেষায়িত হবো-
মানুষটি আমি নির্বাক,
কিন্তু জানি-আমার সাথে আমি কতটা সবাক।
জানি প্রতি সেকেন্ডে কত শতবার কথা হয়-
আমার সাথে আমার,
দহন ছাড়া ভাবনার-সময় যে নেই ভাবার।
নেই সেখানে লোভ-লালসা, প্রেয়সির নির্যাস
নেই কামনা পিয়াস,
দহনে দহে নিজকে খুঁজে পাওয়ার-আছে বিশ্বাস,
আর আছে, প্রকৃত মানুষ আমি-তার আত্ববিশ্বাস।