মফস্বলে নেমে আসে দুর্ভিক্ষের ছায়া!
ক্ষুধার জ্বালায় চারিদিকে হাহাকার,
শিশু-নারীর আঁখি যেন শোকাহত
রোজগার নেই; বেড়েছে বেকারত্ব।

গ্রাম উঠে গেল শহরে,
ধানের গোলা, ঘর পড়ে রইলো শূন্য।
মাঠে ফসল বুনে না চাষী
চিহ্নহীন আলয়ে নামে নিস্প্রদীপ অন্ধকার,
আগাছায় ভরে গেছে আঙিনা
সেই আগের মত দেখা মিলেনা রাখালের,
বিকেল হলে মেঠো পথে আসেনা ধেনু
তাঁতি বুনেনাকো তাঁত
কেউ আসে না জল নিতে পুকুর ঘাটে।

বুনো ঘাসে ঢেকেছে পল্লীর রাস্তা,
সূর্য অস্ত যায় -
সন্ধ্যায় ঠাকুর ঘরে বাজে না শাঁখ!
কেউ ভাঙে না ধান; পিষে না গম;
ঘোরায় না তেলের ঘানি।
লোহার তালা ঝুলে কুমোরের দুয়ারে
যেন অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ দোকানপাট,
যেখানে একদিন শোনা যেত হাতুড়ির প্রহার
সেও সর্বস্ব বিকিয়ে চলে গিয়েছে শহরে।
শরতের পর নামে শীত
তবু রাহার ধারে জ্বলেনাকো শিখা,
কোথায় হারিয়ে গেল মোড়লদের চুলোচুলি
কিশোররা ওড়ায় না ঘুড়ি;
গভীর রাতে -
ডাকে না কুকুর পথিকের কদমের শব্দে।

ঐ দূর প্রান্তরে সবুজ ক্ষিতিজ হাত নেড়ে ডাকে,
খোয়াবের করাঘাতে ব্যথিত হয়ে
প্রতীক্ষার প্রহর গুনে সোনালি ধান!
ডাক শুনি শহর নগরের পথে পথে,
শ্মশান আর গোরস্থানের মত -
জমে ওঠে মৃতপ্রায় জনস্রোতের ভিড়।

প্রতিজ্ঞাবদ্ধ চিত্তে নয়নের শোকাশ্রু মুছে
তারা ভাবতে থাকে -
দেহাতের প্রতিটা গৃহে ফিরবে সুদিন,
তাই বেজে ওঠে শহর নগরের মার্গে পদশব্দ।
আশাবাদী মন নিয়ে তারা ভাবতে থাকে -
এবার বুঝি দূর হবে বেকারত্ব, ঘুঁচবে দুর্ভিক্ষ!
আসমানে ওঠে স্নিগ্ধ শশী
শুনি নদীর জলের শব্দ; পতগের গান;
চেয়ে থাকে সবাই মুগ্ধ নেত্রে গগন পানে,
হয়ত প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে
হয়ত উঠবে নব মিহির।


রচনাকালঃ- ০৪/০৪/২০১৯