দুর্যোগ পথে, গর্জন মুখর শ্রাবণ বারি ঝরে,
কোন ক্লান্ত পথিক এসে কড়া নাড়ে কুঁড়ে ঘরে?
আশ্রয়ের আশায় করে ভিড়,
মস্তক গুঁজতে চায় নীড়,
ক্লান্ত পথিক চমকে ওঠে জলদ গর্জনের ডরে।
মিথ্যে আশা জাগিয়ে নিত্য দিয়েছি কত ফাঁকি!
লজ্জায় নত করি শির লুকিয়ে ফিরি আঁখি;
আজ ব্যাথা জাগে প্রাণে!
হয়ত ঠকিয়েছি অন্তর জানে,
কথা দিয়ে রাখিনি কথা পড়ে রয়েছে বাকী।
পথের ধারে বসে কাঁপছিল রমণী প্রখর শীতে,
চেয়েছিলাম অগতির হাতে একখানি কম্বল দিতে।
দিতে পারিনি দিব বলে,
আমায় না পেয়ে সে গিয়েছিল চলে,
বাদল দিনে সেই দৃশ্য আবার ভেসে ওঠে চিতে।
রোগীকে ঔষধ কিনে দিব বলে গিয়েছিলাম ভুলে-
রাতে কত তার কষ্ট হল, কি হবে সে কথা তুলে!
দ্যুলকে শুনি ডাক তার,
অনুতাপে মরি বার বার,
হাতজোড় করি, তবু ক্ষমা পাব না কোন কূলে।
হাটে এক বৃদ্ধা, ঝুড়িতে নিয়ে বসেছিল ফল
কলা কিনে ছুড়ে দিলাম টাকা করে শত খল;
বাড়ি ফিরে, চিন্তায় মরি আহা
খুঁজে পেল কি না সে তাহা!
আজও সে যেন রয়েছে হাত পেতে চোখে নিয়ে জল।
এক নিরাধার জননী ডেকেছিল বৃদ্ধাশ্রমে,
যাব বলে অবশেষে যাওয়া হয়নি কোন ভ্রমে।
অর্থের লোভে পাইনি সময়,
ফিরিয়ে দিয়েছি তার অনুনয়;
আমার প্রতি তার মাত্রিত্বের ঋণ বেড়েছে ক্রমে।
সদনের আঙিনায় ভিখারি এলে গিয়েছি দূরে চলে,
ধিক্কার দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছি কোথায় কু-কথা বলে!
কোথায় ব্যাথা পেল দেখিনি কখনো,
জীবনের অঙ্কটা মিলেনি এখনো;
স্বচ্ছ্ব মন কালো হয়েছে দূষিত ডোবার শতদলে।
পথের শেষে পরিচয় হল এমন এক বাস্তবতার সনে,
কথা দিয়ে রাখিনি কথা ক্লেশ জমেছে মনে!
নয়ন সম্মুখে ভেসে ওঠে স্মৃতি,
ভুলে গেছি যেন সকল প্রীতি;
হায়, এ অনুতাপের দহনে পুড়ছি ক্ষণে ক্ষণে।
রচনাকালঃ- ২১/০৩/২০১৯