ঐ যে দেখো, ঐখানে তে ঘুমিয়ে আছে
আমার প্রিয়জন,
আমায় ছেড়ে ঐ নির্জন আঁধারে নিথরে
ঘুমিয়ে থাকে পর মানুষের মতন।
তার পাশে বসে রোজ কত কথা বলি
নয়নে ঝরিয়ে শ্রাবণ ধারা,
এত ডাকি তারে বিনয় করে আমার একটা
ডাকে ও দেয় না সাড়া।
ওর কিন্তু এভাবে একা ঘুমানোর কথা ছিলো না
ঘুমানোর কথা ছিলো আমার বুকে মাথা রেখে,
ঘুমানোর কথা ছিলো স্বপ্নের সেই সাত রঙ্গে আঁকা
সোনার পালঙ্কের ঘরে, শুধু আমার বুকে মাথা রেখে।
আচ্ছা, ওর কি আমায় মনে পড়ে? ওর নয়নে কি
শ্রাবণ ঝরে আমায় ছেড়ে থাকার বেদনায়?
তোমরা কি বলতে পারবে আমায় একটা পথের ঠিকানা?
আমি আর পারছি না, আমি তার কাছে চলে যেতে চাই।
আর কতকাল এই সমাধি কে ভিজিয়ে রাখবো
আমার দুই নয়নের জলে?
সন্ধ্যা হলে আর কত প্রদীপ জ্বালাবো সমাধি তে,
কতবার বলবো ফিরে এসো?
কত পরিচ্ছন্ন করবো ঐ সমাধি র উপর
ঝরা পাতা পড়ে থাকলে?
আর পারছি না, বড্ড ইচ্ছে করছে তার দেওয়া
সেই নীল শাড়ি টা পড়ে,
বৈশাখী তে দেওয়া সেই লাল পের সাদা শাড়ি টা পড়ে,
ঐ সমাধীর মধ্যে তার পাশে গিয়ে আমি ও ঘুমায়।
না না, তোমার চলে যাও আমি যাব না এই দুপুরে সে
ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে যেত,
আমি দৌড়ে গিয়ে তার জন্য কিছু খাবার এনে দিতাম
সে আবার সচল হয়ে যেত।
জানো, ওর কিন্তু এখন ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছে, তোমরা যাও
আমি কিছু খাবার এনে দেই,
কাতর দেহে সবল হয়ে যাবে ঐ যে বললাম কিছু পাবে যেই!
সারা শহর আমার হাতে হাত রেখে
চষে বেড়ানোর সেই দুরন্ত চঞ্চল,
পাষাণের মত কেমনে একা চলে গেলো
আমার চোখে দিয়ে এক সিন্ধু জল?
সবাই চলে গেছে মিছামিছি সমাধীর উপরে
তার দুপুরের খাবার রেখে,
কিছুক্ষণের জন্য বিদায় নিয়ে ছুটে চলিলাম
আমার বাড়ির বাঁকে।
এমনি করে বছরের পর বছর প্রিয় জনের সমাধি’র পাশে,
প্রহর গুণে গুণে মনকে বোঝায় সে যদি আবার ফিরে আসে।