পরিচয় লও হে নিখিল-অখিল
আমি এক নিরন্ন-নিরাশ পিতৃ-সূত,
আমার দুখ নির্বিকার সুখ অনাগত
সে সুখ অলখে চির-সুপ্ত হয় না জাগ্রত।
তবু আমি.. তবু এই আমি
প্রণয়ের বেণু বাজায় অহর্নিশি নিরন্তর,
যে বা যারা নির্দয় নৃসংশ থাবায় হয়েছে চির-অন্তিম
আমি প্রস্তুত থাকিতে প্রয়াস করি তাদের দিতে নিস্তার।
আমি অবারিত নিরবগ্রহ এ ধরাতে,
আমার আত্মবিশ্বাসে ছুটে চলি হুতাশীর কাছে রিক্ত হাতে।
যদিও আমার এই চিত্ত ঘরে বসত করে
নিখিল বেদনের শিখর হিমাদ্রি,
সে বেদন বহ্নি জ্বালায় নিত্য দিন দেহের মাঝে
আর আমি শুধু একাই নিঃশব্দে পুড়ি।
আমি এক শীর্ণ দেহে শয্যায় পড়ে থাকা
অগোচরে ফুঁপিয়ে কান্না পল্লী জননীর-সূত,
অধুনা তে জননীর কোল ছেড়ে হয়েছি বিরাগী
জানি সে তো নহে বিহিত, তবু করেছি অনিকৃত।
চলি বিদ্রোহী বেশে, আমি বিষে ভরা কাল-সাপ,
আমি চৈত্র মধ্যাহ্ন কঠোর রবি তাপ।
আমি নজরুলের মত দুর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস, দুর্বার
মাঘের সন্ন্যাসী আমি ধর্মরাজের দণ্ড,
সাবধান ওরে জালিমের দল আছিস যত ভণ্ড।
সত্য পথে চল রে দিন থাকিতে একটু ভাবিয়া
যদি কলম ছুড়ি, তোরা উঠবি কাঁপিয়া,
চির-সর্গ হারাম হবে তোদের হাবিয়া নিবে বরিয়া।
আমি প্রহত অনাথের গলে মালা হয়ে
অসীম প্রণয় দিয়ে হাসি-পুষ্পের হাসি,
আমি কিশানের সুখ-দুখ, শ্যামলিমা প্রান্তে-
রাখালের কলতানে বাজানো বাঁশি,
আমি বিজনে বসে মনে প্রেমোদয়ের সুখে
আহা কি দরুন প্রেমানন্দ জোয়ারে ভাসি।
আমি দুর্মদ চঞ্চল, নাহি মোর কোন্দল,
পেটে ভরপুর মদ নিশিতে ঘুম ঘুম হিন্দোল।
আমি অগ্নি, সাইক্লোনও, ঘূর্ণি, মহা ভয়
আমি মহা প্রলয়ের শেষ হুংকার,
ভালো হয়ে যা নির্বোধ ও জালিমের দল
আবারও বলি সাবধান হুশিয়ার।
আমি বিশ্ব বিধাত্রির কাছে চির-ক্ষমা প্রার্থী
ক্ষমা করে দাও হে লালন পালন সৃষ্টিকর্তা,
তোমার আইন মেনে সত্যের ফুল-
ফোটাবো নিরন্তর, দাও আমায় সে ক্ষমতা।
আমি মুহাম্মাদের উম্মত, ইয়া নবী সালামু আলাইকা
লক্ষ্য সালাম তোমার রওজা মোবারকে,
তুমি তো বিশ্ব বিধাত্রীর শ্রেষ্ঠ বন্ধু
পার করিয়ো শেষ বেলায় এই অধম টাকে।
আমি হবো না শান্ত যতদিন হবে না সত্যের চির-জয়,
আমি সত্য রণ-ক্ষেত্রে লড়বো চিরদিন,
এই লও বিশ্ব, দিলাম আমার পরিচয়।