পূজা যত আসে কাছে....পুলকে হৃদয় নাচে
শরতের আগমনী কবিতা (তৃতীয় পর্ব)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

শরতের শিশিরভেজা ঘাসে কমলা রঙের নলাকার বোঁটায় সাদা পাপড়ির অজস্র ফুল পড়ে থাকার দৃশ্য লোভনীয়। শিশিরভেজা ঘাসে খালি পা মাড়িয়ে শিউলি ফুল কুড়ানোর একটা আলাদা সুখ আছে। রাতে ফুটে সকাল না হতেই ঝরে পড়ে বলে এই ফুলকে বলে ‘নাইট জেসমিন’। শিউলি ছাড়াও এর আরো অনেক নাম আছে। যেমন – শিউলি, শেফালি, শেফালিকা (বাংলা), শেওয়ালি (মণিপুরী), পারিজাত (মারাঠি), পারিজাতম (তেলেগু), গঙ্গা শিউলি (উড়িষ্যা), হরসিংগার, রাগাপুষ্পী, মালিকা ইত্যাদি।

পারিজাত শিউলির আরেকটি বিশেষ নাম। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনীতে অনেকবার এসেছে শিউলি ফুল বা পারিজাতের কথা। পূজোয় শিউলিই এমন ফুল যেটি মাটিতে ঝরে পড়লেও তাকে দেবতার উদ্দেশে নিবেদন করা যায়। প্রাচীনকালে এ ফুলের বোঁটার রঙ পায়েস ও বিভিন্ন মিষ্টান্নে ব্যবহার করা হতো। তাছাড়া শিউলির মালা খোঁপার সৌন্দর্য বাড়াতেও অনন্য। ফুল চ্যাপ্টা ধরনের। শিউলির পাতা ও বাকল বিভিন্ন রোগের মহৌষধ। ঔষধি হিসেবে ব্যবহার হয় শিউলির বীজ, পাতা ও ফুল। এই ফুল বোঁটা শুকিয়ে গুঁড়ো করে পাউডার বানিয়ে হালকা গরম পানিতে মেশালে চমৎকার রঙ হয়।

শিউলি ফুলের আরেক নাম শেফালি। দিনের আলোর স্পর্শে এই কমলা-সাদা ফুলটি তার নিজস্বতা হারায়। সূর্য ওঠার আগেই গাছ থেকে খসে পড়ে মাটিতে।

শিউলিই এমন এক ফুল যেটি মাটিতে ঝড়ে পড়লেও পূজোয় দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদন করা যায় এই ঝরা ফুল।এই ফুল শরৎকালে ফোটে। এর ফুলগুলি রাতে ফোটে এবং সকালে ঝরে যায়। শরৎকালের শিশির ভেজা সকালে ঝরে থাকা শিউলি এক সুন্দর মনোরম দৃশ্য তৈরি করে।

বাংলা কবিতার আসরের সকল শ্রদ্ধেয় কবিগণকে জানাই শারদ-শুভেচ্ছা। বাংলা কবিতা-আসরের জয় হোক, বাংলা কবিতার জয় হোক, কবিদের জয় হোক। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!

পূজা যত আসে কাছে....পুলকে হৃদয় নাচে
শরতের আগমনী কবিতা (তৃতীয় পর্ব)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী



শরতের সোনা রবি

লাল রং মাখে,

ফুলবনে ফুলকলি

ফুটে ফুলশাখে।



শরতের আকাশেতে

সাদামেঘ ভাসে,

দূর হতে আগমনী

গীত ভেসে আসে।



শিশিরের বিন্দু ঝরে

ঘাসের আগায়,

ময়না চড়ুই আসে,

চরে আঙিনায়।



গাঁয়ের পথের বাঁকে

গোরুগুলি চরে,

বধূরা অজয় থেকে

জল আনে ঘরে।



শঙ্খচিল ভেসে চলে

আকাশের গায়,

শালিকের দল উড়ে

নদী কিনারায়।



সোনাঝরা রোদ হাসে

অজয়ের চরে,

দুই ধারে কাশ ফুল

ফুটে থরে থরে।



শাল পিয়ালের বনে,

মহুল তলায়,

সাঁওতালীরা উল্লাসে

মাদল বাজায়।



পূজার খুশিতে চিত্ত

পুলকিত হয়,

শরতের আগমনে

নাচেরে হৃদয়।