শাঁখা সিঁদুর আলতা (সামাজিক কবিতা)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


এই তো সেদিন পথের ধারেতে
তার সাথে হল দেখা,
পরণে সবুজ বেনারসী শাড়ি
হাঁটিতেছিল সে একা।

সিঁথিতে সিঁদুর কপালেতে টিপ
হাতে পলা আর শাঁখা,
চলিছে রমণী কাঁধেতে তাহার
ভ্যানিটি ব্যাগটি রাখা।

আলতা পরা ঐ চরণযুগল
দেখে যেন মনে হয়,
হতে পারে কোন দেবী প্রতিমা
নাহিক কোন সংশয়।

আলতা পরানো পা দুখানি তার
মৃত্তিকার পরে রাখি,
হাঁটিতেছিল সে আপনার মনে
কহিলাম তারে ডাকি।

আমি কহিলাম, এই যে ম্যাডাম!
কোথায় চলেছো শুনি­?
নারীদের হেথা একা চলা মানা
জানো নাকি সেটা তুমি?

এই বসুধায় নারীলোভী কত
অসুরের দল থাকে,
একলা পেলেই টেনে নিয়ে যায়
ছাড়ে নাকো আর তাকে।

শুনে নারী কয় শোন মহাশয়
আমি বাংলার নারী,
নারীলোভী যত অসুরের দল
সংহার করিতে পারি।

কে বলে নারীরা অবলার জাতি
অসুরে করি না ভয়,
শক্তি ও সাহস মনের জোরেই
ভয়কে করেছি জয়।

প্রতিবাদী মন কণ্ঠে তাহার
শুনি বজ্রের হুংকার,
বাঃ রে আমার বাংলার নারী
সাহস আছে তোমার।

একদিন গেল দুইদিন এল
তিনদিন হল পার,
হঠাৎ সেদিন গাজন তলায়
দেখা হল পুনর্বার।

চমকিয়া উঠি জিজ্ঞাসিনু আমি
কে তুমি বাংলার নারী?
কেন মা তোমার এ মলিন বেশ?
তবুও চিনিতে পারি।

বিবর্ণ হয়েছে সিঁথির সিঁদুর
চোখ দুটি ছল ছল,
ভেঙে গেছে তার হাতের শাঁখা
চোখ ফেটে আসে জল।

অসুরে অসুরে ছেয়ে গেছে দেশ
ভুলিতে কভু কি পারি,
অসুরে বধিতে সংহার করিতে
ত্রিশূল ধরো গো নারী।

নারীরা বিদ্রোহী তাই বাজে আজি
শব্দের কড়া হাতুড়ি,
বঙ্গ ললনার হাতের শাঁখা আর
সিঁথির সিঁদুর চুরি।

মোমবাতি আজ জ্বলন্ত মশাল
দাবানল চারিদিকে,
কাব্যের কাণ্ডারী লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
কবিতায় রাখে লিখে।