বিশ্ব ভালবাসা দিবসের কবিতা
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। সারাবিশ্বে নানা উৎসব আয়োজনে পালিত হচ্ছে দিনটি। তবে ভালোবাসা তো একদিনের জন্য নয়। অনেকেই এই দিবসের বিরোধিতাও করেন। কেননা ভালোবাসা শব্দটির সঙ্গে আমরা পরিচিত জন্মের পর থেকেই। মানুষের বেড়ে উঠা এই ভালোবাসাকে কেন্দ্র করেই।
তবে আজ যে দিনটিকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সেদিনটির ইতিহাস কিন্তু মর্মান্তিক। ঘটে গিয়েছিল এক জঘন্য ঘটনা। প্রাণের বিনিময়ে এসেছিল এই দিবস।
এই দিবসের সূচনা প্রাচীনকালেই। প্রাচীন রোমে ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল রোমান দেব-দেবীর রানি জুনোর সম্মানে ছুটির দিন। জুনোকে নারী ও প্রেমের দেবী বলে লোকে বিশ্বাস করত। কারও কারও মতে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস হওয়ার কারণ ছিল এটিই।
আবার কেউ বলেন, রোমের সম্রাট ক্লডিয়াসের সময় শুরু এই দিবস। সে সময় বিশ্বজয়ী রোমানরা একের পর এক রাষ্ট্র জয় করে চলেছে। আর যুদ্ধের জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী সেনাবাহিনী। কিন্তু, সমস্যা দাঁড়ায় তরুণীদের নিয়ে। তারা যে কিছুতেই তাদের পছন্দের পুরুষটিকে যুদ্ধে পাঠাতে চায় না।
তখন সম্রাট ক্লডিয়াস মনে করলেন, পুরুষরা বিয়ে না করলেই বোধ হয় যুদ্ধে যেতে রাজি হবে। ভাবনাটার বাস্তবায়ন করলেন তিনি। বিয়ে নিষিদ্ধ করলেন সম্রাট। তিনি ঘোষণা দেন, আজ থেকে কোনো যুবক বিয়ে করতে পারবে না। যুবকদের জন্য শুধুই যুদ্ধ। তার মতে, যুবকরা যদি বিয়ে করে তবে যুদ্ধ করবে কারা?
কিন্তু ভালোবাসার তাড়নায় ছুটে চলা তারুণ্যকে কি আর আইন করে বেধে রাখা যায়? সম্রাট ক্লডিয়াসের এ অন্যায় ঘোষণার প্রতিবাদ করেন এক যুবক। যার নাম সেন্ট বা সন্তো ভ্যালেন্টাইন। তিনি ছিলেন এক রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজক।
তিনি নিজে সকল প্রেমে আবদ্ধ তরুণ -তরুনীদের এক করার ব্যবস্থা করলেন, বিয়ে দিলেন সবাইকে। কিন্তু সেই প্রথা বেশি দিন তার ধারা বজায় রাখতে পারলো না। ধরা পড়লেন ভ্যালেন্টাইন। তাকে বন্দি করা হলো।
অসীম সাহসী ভ্যালেন্টাইনের প্রতিবাদে খেপে উঠলেন সম্রাট। রাজদ্রোহের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু, তখন নতুন করে আরেকটা সমস্যা দেখা দিল। তার অনেকে ভক্তরাই ভ্যালেন্টাইন’কে দেখতে কারাগারে যেতেন। দিয়ে আসতেন তাদের অনুরাগের চিহ্ন হিসেবে অনেক ধরনের ফুলের শুভেচ্ছা। তাদের মধ্যে একটি অন্ধ মেয়েও ছিল।
শোনা যায়, সেন্ট ভ্যালেন্টাইন তার অন্ধত্ব দূর করেন। শুধু যে তার দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তাই নয়, সঙ্গে মেয়েটির প্রেমে আবদ্ধ হয়ে ধর্মযাজকের আইন ভেঙে তাকে বিয়েও করে জীবনসঙ্গী করেন তিনি। কিন্তু তারপর? এমন একটা খবর রাজার কানে পৌঁছোতেই তিনি ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন।
ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে, প্রিয়াকে লেখা ভ্যালেন্টাইনের শেষ চিঠিতে ছিল- ‘লাভ ফ্রম ইউর ভ্যালেন্টাইন’৷ আর সেই দিনটিও ছিল ১৪ই ফেব্রুয়ারি। ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ গেলাসিয়াস প্রথম এই দিনটিকে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ হিসেবে ঘোষণা করেন।
বিশ্ব ভালবাসা দিবসের কবিতা
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
মানুষে মানুষে হোক প্রীতির বাঁধন
ভালবাসা দিবসের দৃঢ় অঙ্গীকার,
মানুষকে ভালবেসে করহ আপন
মানুষকে ভালবাস সেবা কর তার।
বিশ্বপ্রেম ভালবাসা দিবস আজিকে
বিশ্বজুড়ে ভালবাসা করিছে পালন,
মানুষের পাশে এসে হাত হাত রেখে
মানব প্রেমিক হও হোক দৃঢ় পন।
সুখেদুখে থাক যদি মানবের পাশে
জগতে মানব সেবা শ্রেষ্ঠ ধর্ম হয়,
বিপদ আর আপদ যদি কভু আসে
পাশে থেকে কর জয় মানব হৃদয়।
জীবজ্ঞানে শিবসেবা মানবের ধর্ম
ভালবাসা দিবসেতে কর অঙ্গীকার,
মানবের সেবা করা হয় পূণ্য কর্ম
মানবেরে বাঁচিবার দাও অধিকার।
বিশ্ব জুড়ে ভালোবাসা দিবস পালন,
কবিতা লিখিল কবি ভাণ্ডারী লক্ষ্মণ।