পূজা যত আসে কাছে..... পুলকে হৃদয় নাচে
শরতের আগমনী কবিতা (প্রথম পর্ব)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

শরৎ মানে সতেজতা। আর এই সতেজতাকে ঘিরে থাকে নানা ফুল। শরতের ফুলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হল কাশফুল আর শিউলি। বালুর চরগুলো হালকা আর লোমশ কাশফুলে ভরে উঠে এসময়। এ যেন প্রকৃতির এক সাদা গালিচা। শরতের রাতে সুগন্ধ বিলায় ছোট্ট ফুল শিউলি। আর সকালে কমলা-সাদা শিউলি ফুলে ভরে যায় শিউলি তলা।

জ্যোৎস্নাকে যারা উপভোগ করতে চান তাদের জন্য সেরা ঋতু শরৎ। নিজের সৌন্দর্যের সবটুকু ঢেলে শরতের জোছনা রাঙিয়ে রাখে প্রকৃতি। অন্য সময়ে জোছনার তুলনায় তাই শরতের জোছনা আবেদনময়ী বেশি। জোছনারাতে নদী পাড়ে বসে হালকা বাতাস আর শিউলির ঘ্রাণকে সঙ্গী করে চাঁদের মায়াজালে বন্দি হতে চান অনেকেই।

শরতের অন্যান্য ফুলগুলোর মধ্যে রয়েছে- শেফালি, হিমঝুরি, গগনশিরীষ, ছাতিম, পাখিফুল, পান্থপাদপ, বকফুল, মিনজিরি, কলিয়েন্ড্রা। কেবল তাই নয়, শরতের রূপের অংশ হয় শাপলা, শালুক, পদ্ম, জুঁই, কেয়া, কামিনী, মালতি, মল্লিকা, মাধবী, ছাতিম ফুল, বড়ই ফুল, দোলনচাঁপা, বেলি, জারুল, নয়নতারা, ধুতরা, ঝিঙে, জয়ন্ত্রী, রাধাচূড়া, স্থল পদ্মসহ নানা রকমের ফুল।

অজয় নদীর তীর ঘেঁষে কাশফুলের অপরূপ সমারোহ, উত্তরের বাতাসে সাদা কাশফুলের ঢেউ খেলা স্রোত, খালবিলে জলজ ফুলের রূপ-লাবণ্য প্রকৃতিকে সাজিয়ে তোলে প্রেয়সীর মতো। শিউলির সৌরভ, ঘাসের ডগায় শিশিরের আল্পনা মনে করিয়ে দেয় শরৎ এসেছে।

পূজা যত আসে কাছে..... পুলকে হৃদয় নাচে
শরতের আগমনী কবিতা (প্রথম পর্ব)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

সাদামেঘ দলে দলে আকাশেতে উড়ে চলে
সোনারোদ ঝরে আঙিনায়,
শরতের আগমনে ফুল ফুটে ফুলবনে
গুঞ্জরিয়া অলি তথা ধায়।

তরুর শাখায় পাখি কিচিমিচি ডাকি ডাকি
সুমধুর সুরে গায় গান,
সবুজ মাঠের পরে সকালে শিশির ঝরে
মাঠে সবুজের অভিযান।

কচি কচি ধানগাছে মাঠ সব ভরে আছে
ছাগল আলের ধারে চরে,
সবুজ ডাঙার পরে, গরু ও মহিষ চরে
এক সাথে সারাদিন ধরে।

রাখাল বাজায় বাঁশি মাঠে চাষ করে চাষী
সাঁঝ হলে ফিরে আসে ঘরে,
গাঁয়ের মন্দির মাঝে সন্ধ্যায় কাঁসর বাজে
ঢাক বাজে চিত্ত উঠে ভরে।

আকাশেতে তারা ফুটে পূর্ণিমার চাঁদ উঠে
জোছনায় ভরে চারিদিক,
অজয় নদীর চরে চাঁদের আলোক ঝরে,
নদীজল করে ঝিকমিক।