হাংরি আন্দোলনের আরো একটি ইশতাহার আজ প্রকাশ করলাম |প্রথম ইশতাহার আগের পর্বে প্রকাশ করেছি |
হাংরি আন্দোলন, বাঙলা সাহিত্যের এক অদ্ভুত ক্রান্তিকালে আরও অদ্ভুতুড়ে এক আন্দোলনের নাম।মাত্র ২১ বছর বয়েসে কলকাতার কবি মলয় রায় চৌধুরীর মাথার পেছন দিকের গ্রে সেলগুলোতে যখন এই আন্দোলনের দামামা প্রথম বেজে উঠল, তখন কেউ হয়তবা ধারনাও করতে পারেননি যে একসময় এই আন্দোলনই পাল্টে দেবে রবীন্দ্র-নজরুল পরবর্তী বাঙলা সাহিত্যের স্রোতধারা |বদলে দেবে অন্য সংস্কৃতি থেকে ধার করা ময়ুর পুচ্ছ দিয়ে কালজয়ী সাহিত্য তৈরির মত সাময়িক আত্মঘাতী প্রবনতাকে।
২২শে শ্রাবণ (মলয় রায়চৌধুরী )
শাওনে ভেজা মন ...........
কোথায় কবি .............
কিশোরীর কালো চোখে ................
না পাওয়ার ছবি ..................
তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে হলো 'শয়তানের মুখ', 'জখম', 'ডুবজলে যেটুকু প্রশ্বাস', নামগন্ধ চিত্কার সমগ্র',
'কৌনপের লুচিমাংস', 'এলেন গিন্সবার্গ এর ক্যাডিস গ্রন্থের অনুবাদ প্রভৃতি |সাহিত্যের সনাতন অনুশাসন গুলির বিরুদ্ধে তাঁর বিদ্রোহ ওনার রচনার অন্যতম বৈশিষ্ঠ|
স্বদেশী আন্দোলনের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী নেতাদের দেখানো এক সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত দেশের স্বপ্ন যখন টকে গিয়ে পচতে শুরু করল আর সেই পচনের ধারা ধীরে ধীরে বাঙলা সংস্কৃতির সৃজনশীলতাকে খেতে শুরু করে কালজয়ী সাহিত্যিক জন্মাবার সব পথ রুদ্ধ করে দেবার সকল আয়োজন প্রায় শেষ করে এনেছে, তখনই আবির্ভাব ক্ষুধিতের আন্দোলন বা ক্ষুধার্তের আন্দোলনের যা বাঙলা সাহিত্যের ইতিহাসে হাঙ্গরি আন্দোলন নামে সমধিক প্রচলিত।
হাংরি আন্দোলনের উদ্দেশ্য সংবলিত ইশতাহার :-----
১. অ্যারিস্টটলের বাস্তবতাকে কখনও নকল করা হবে না, কিন্ত আচমকা জাপটে ধরতে হবে অপ্রস্তুত ছেনালি অস্তি ।
২. নৈঃশব্দকে অটুট রেখে নির্বাককে বাস্তব হয়ে উঠতে হবে ।
৩. ঠিক সেই রকম সৃষ্টি-উন্মার্গে চালিত হতে হবে যাতে আগে থাকতে তৈরি পৃথিবীকে চুরমার করে পুনর্বার বিশৃঙ্খলা থেকে শুরু করা যায় ।
৪. লেখকের চেতনাকে বর্জন করে প্রতিটি অন্য বোধ-জরায়ুকে কাজে লাগানো হবে ।
৫. ফাঁস করে দেয়া হবে যে, কেবল কান্তি- সত্তা হিসাবেই জীবন ও অস্তিত্ব স্বীকৃত ।
৬. অন্যের প্রদত্ত বোধ- জ্ঞানের চেয়ে বরং সমস্তরকম সন্দেহ ও অসহায়তাকে গ্রহণ করা হবে ।
৭. দ্বিপদ-উন্নতিকামী প্রাণীদের তাবৎ মূল্যবোধকে আক্রমণ করে ছারখার করা হবে ।
৮. চরম সততার উদ্দেশ্যে সবরকম চাটুকারদের মাগিদের শপৎপূর্বক পরিত্যাগ করা হবে ।
৯. আত্মাবিষ্কারের পর লেখা আর আঁকা ছেড়ে দেয়া হবে ।
আজ এ পর্যন্তই থাক ;
বিশেষ অনুরোধ : পাঠকদের কাছে মতামত চাই পরের পর্বে আরো আলোচনা করার জন্যে |