'জানা অজানা'
'ড. শাহানারা মশিউর'

তুমি কাল্পনিক,
তুমি সত্য, তুমি গল্প-
তুমি আরো, আরো অনেক কিছু!
তোমাকে জানার সমান্তরালে যা কিছু অজানা আছে
তাতেই আমার চিরকৌতুহল।
নবীন সূর্যের কোমল আলোয় অবগাহন করে
শুদ্ধ মন আর বিশুদ্ধ শক্তি নিয়ে
যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়েছিলে,
উত্তোলিত করেছিলে পৃথিবীর অবনত অন্তর!

আজ তোমার অভিমানী ঠোঁট দুটো অনড়
মুখে কোন কথা নেই,
চোখের মাঝে শত জনমের দৃশ্য সঞ্চিত আছে…
অনুবাদ করবার যোগ্যতা, নেই আমার।
বন্ধু তোমার এত কাছে থেকেও
অনেক কথা রয়ে গেলো অজানা!

কবিতাটি আলোচনা সভায় আনার প্রধান কারণ কবিতাটি আমার মনকে শুধু স্পর্শ করেনি, কবিতাটি আমার মনকে বিদ্ধ করেছে। কবিতাটির মধ্যে নেই কোনো কঠিন শব্দ , আছে শুদ্ধ মন আর বিশুদ্ধ শক্তি নিয়ে কবির জানা অজানার সহজ অনুভূতি।  আসলে তো আমরা  দু:খ-সুখ সহ্য করা সাধারণ মানুষ।  কবিতায় যখন  জীবনের সূর যোগ করা হয়, তখন অবজ্ঞাত বা উপেক্ষিত মানুষেরাও সম্মান লাভ করে। কবিতাটি পড়লেই বোঝা যায় যে কবির অন্তরে যে জানা অজানার উৎস আছে, তা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।হাজার সীমাবদ্ধতার মাঝে থেকেও কবি যেটুকু জেনেছেন তাতে তিনি আনন্দিত , আবার যা জানতে পারেন নি তার জন্যে কবির মন আনন্দহীন মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। পৃথিবী বিশাল এবং বিপুল আয়তনের।কবির চোখের মাঝে শত জনমের দৃশ্য সঞ্চিত আছে। জানার মত হাজার হাজার জিনিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কিন্তু কবির ভাবনাতে এই বিশালাকার পৃথিবীতে কত অজানা জানার বাহিরেই রয়ে গেল। তিনি তার সান্নিধ্য ও পেলেন না। চির কৌতূহলে ভরা আমাদের জীবন। তাই জানতে না পারার বেদনা আমাদের মনকে পীড়া দেয়। কবি সেই অজানার অপূর্ণতা ও নিজের সীমাবদ্ধতাটুকু মেনে নিলেন। আর তা নিয়েই রচনা করলেন একটি অত্যন্ত সাধারন কবিতা কিন্তু অর্থের দিক দিক দিয়ে হয়ে উঠলো সে সর্বত্রগামী।  
কবির কবিতা বিচিত্র পথে গেলেও সর্বত্র পৌঁছাতে পারেনি কিন্তু পাঠকদের সঙ্গে একটা কেমন জানি আত্মীয়তা অর্জন করতে পেরেছে।

আর এখানেই কবি ও কবিতার সার্থকতা।

আপনাকে জানাই তাই আমার অন্তরের গভীর অভিনন্দন প্রিয় বন্ধু।