ওরে আমার উড়নচণ্ডী মন সুযোগ পেলেই
যেন খুঁজে ফিরি সবুজ কানন আর নীল কমল।
এ গ্রামের পরে দূরে ঐ যে গ্রাম,
তারপর দেখো কি সুন্দর পাহাড়ী ঝর্ণা দেখা যায়!
এপাড়ে ওপাড়ে বুনো শালিকের দল জোড়া বেঁধে
করছে খেলা!
ভোর হতে না হতেই পাখির মিষ্টি কলরব
দু'গায়ের মাঝে নয়ন জুড়ানো একটা পদ্মবিল
যেথায় ফুটে আছে লাল শাপলা;
নীল আর গোলাপী পদ্ম।
মাথার উপরে নীলাম্বরী আকাশ,
দূরের ঐ পাহাড় থেকে
কিছুক্ষণ পরপর ভেসে আসছে ডাহুক এর ডাক।
শুভ্র আকাশে দূরন্ত বলাকার ছুটে চলা,
এ যেন নয়নাভিরাম প্রকৃতির রূপের পসরা।
সবুজ পাতার উপরে খেলছে জলময়ূর
মা পাখিটা উড়ে গেছে অনেক আগেই
আরেক প্রেমিকের সন্ধানে
আর বাবা পাখিটা ; পদ্ম পাতার উপরে
ডিম ও ছানা গুলোকে আগলে রেখেছে
অদ্ভুত এক মায়ায় !
ঠিক যেন আমার জীবনের ফেলে আসা
কিছু অতীত যা এখনো আমাকে তাড়া করে।
চোখের কোণায় ভরে আসা জল মুছে,
আমি আবারও হারাই প্রকৃতির মাঝে।
পদ্ম পাতার আড়ালে খেলছে শিং আর মৃগেল
যেন তারাও পদ্মকে মাথায় পরার
প্রতিযোগিতায় মত্ত।
এ এক প্রকৃতির রহস্যময় লীলা।
আমার পড়নে লাল শাড়ি আর খোঁপায় বুনো ফুল
ছুটে চলেছি অবলীলায় প্রকৃতির প্রেমে।
যেন প্রকৃতি ও আমি মিলেমিশে একাকার।
যেন হার না মানা বলাকার মতো
ছুটে চলা দূরন্ত এক কিশোরী।
কিছুটা দূরে ছোট্র একটা ডিঙিতে
পাশের গ্রামের নাদের আলী।
বড্ড লাজুক টাইপের সুদর্শন এক যুবক
সুমিষ্ট হাসি আর মন মাতানো কথার ঢেউ,
যেকোনো রমনীর বুকে
তরঙ্গের জোয়ার তুলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
প্রথম দেখাতে যে কোন রমনী তার মায়ায়
আটকে যেতে বাধ্য।
চেহারায় কি যেন একটা মায়া,
একটা নিষ্পাপ চাহনি!
আমার বেলায়ও এর বিপরীত কিছু ঘটেনি।
বুকে তার গভীর ভালোবাসার ফোয়ারা
যা আমার তিক্ত শৈশব স্মৃতিকে ভুলিয়ে,
নতুন করে দিয়েছে ভালোবাসার স্বাদ।
তার ঐ ছোট্র ডিঙি আর খড়কুটোর ছাউনি
সবমিলিয়ে এখন আমার ছোট একটা সুখের ঘর।
জোড়া শালিকের মতো একে অপরের সাথে
জীবনটা হেসেখেলে পার করতে চাই
চাই জংলা ফুল খোঁপায় পড়ে,
মাঝির বাঁশির সুরে সুরে ডিঙি নৌকায়
মহাকালের স্রোতে গা এলিয়ে দিতে।
জলময়ূরী না হয়ে শুভ্র পায়রা হয়ে
বেঁচে থাকতে চাই
যুগে যুগে ভালেবাসার এই মিষ্টি স্রোতে,
খড়কুটোর ঐ ছাউনিতে।