রজত আলী তুমি কি জানো
দুইডা ভাতের লাগি চাতকের মতো চাইয়া আছিলাম!
কিযে খরা আছিলো, চারিদিকে শুধু হাহাকার
খাবারের কাড়াকাড়ি চারিদিকে আকাল আর আকাল।
কোন কোন দিনতো হুদা পানি খাইয়াই পার করছি।
কোন খাবার আছিলো না।
দু'মুঠো ভাতের লাগি কতো যে কানছি
তাও দুইডা ভাত পাই নাই।
পেডে খিদার যন্ত্রণা, এ গাঁয়ের বেবাকে ভাতের লাগি ছটফট করছে।
কেউ কেউ আবার মাটি মুখে নিয়া বুকটারে
শান্ত করছে।
চারিদিকে শুধু হাহাকার আর খাওনের কষ্ট
কোন হানে বৃষ্টির ছিটেফোটাও আছিলোনা,
গ্রামের চারিপাশে ব্যাবাক ফসলের মাঠ
ক্ষরায় ফাইট্টা চৌচির হইয়া আছিলো।
পুকুর গুলান শুকায়ে এমন হইয়া আছিলো যে
পক্ষী গুলান পর্যন্ত পানি খাইবার পারে নাই।
মোরা দুইজন না খাইয়া থাকছি তাও তোর মুখে দুইডা দানা তুইলা দেওয়ার জন্যি মেলা জায়গায় কাম করছি।
তোর মা মাইনসের বাড়িত কাম করছে
এক বেলা ভাতের লাগি।
কোন কোন দিন তোরে খাওয়াইবার পারছি;
আবার কোন কোন দিন তুই ভাতের লাগি বায়না করতে করতে ঘুমাইয়া পড়ছস।
হে মেলা আগের কথা, এহন কি তোর এইসব কথা মনে আছে?
সময় কতো তাড়াতাড়ি বদলায়ে যায়রে রজত!
এহন সব আগের লাহান ঠিক হইয়া গেছেরে বাপ
গোলা ভরা ধান গোয়াল ভরা গরু, নাই শুধু মোর বেনু!
সেই দিন যদি জাইনতাম আমারে খাওয়ায়ে
মোর আদরের বউডা না খাইয়া মইরা যাইবো
তাইলে কি আর অমন করে পাগলের মতো খাইতাম।
কে জাইনতো যে বাড়িত হেয় কাম লইছিলো,
হারাডা দিন কাজ করার পরে যে খাবার গুলান দিতো
সে এক দানাও মুখে না লইয়া শুধু জল খাইয়াই থাকতো।
আহারে মোর বেনু যদি আগেই জাইনতাম তাহলে কি আর এমনডা হইবার দিতাম?
খারাপ দিনগুলান পার কইরা সুখের দিন গুলান যেমন আবার ফিরা আইলো।
সব কিছু আবার আগের লাহান হইয়া গেলো,
তয় তুই কেনো আইলিনারে বেনু।
তুই কেন ফিরা আইলিনা।