অন্ধকার গর্ভে জন্ম, অজানার খেলা,
এই জীবন কি শুধু ক্ষুধার জ্বালা?
মায়ের কোল খুঁজেছিলাম, পেয়েছি ক্ষুধার শূল,
এ জন্ম কেন, এ জীবন কেন, বুঝি না অজ্ঞান আমি।
রিক্ত পেটে রুদালি গুমরে মরছে, তবু শোনে না কেউ,
চারপাশে শুধু গভীর নৈঃশব্দ্য, ভয়ের অন্ধকার গাঢ়।
দূরের ধনীর বাড়িতে ছুটে যায় মোটা মুরগি,
আমার থালায় শুধু চোখের জল, শূন্য পাতে কাঁপে রাত।
খামচে ধরি হাড়ের খাঁচা, ঠোঁট কামড়ে রুধি গুমরানো কান্না,
ভাবি, এই দুনিয়ায় কেন ফেলা হলো ভুখা পেটে ছটফটাতে।
দিন পেরোয় পোকা খেয়ে, রাত কাটে পাতার বিছানায়,
স্বপ্নে ভাতের গন্ধ আসে, আবারও জাগে তীব্র ক্ষুধার আগুন।
হাড়ে হাড়ে টের পাই জীবনের নির্মম কৌতুক,
জন্মগ্রহণের পাপেই কি পুড়বে এই ক্ষুধিত ছায়ার কায়া?
এই শহরে কত রাত কাটলো, ফুটপাত হলো নিজের বাড়ি,
চাঁদের আলো ঢেকে যায় গরীবের কষ্টের কালো ধোঁয়ায়।
কেউ দেখে না পায়ে রক্ত গড়ায়, কেউ শোনে না কান্না,
শুধু কুকুর ও কাকের ডাক, অমানবিক এই নাটক চলে।
মা লালচে চোখে তাকিয়ে বলত, “খেয়ে নে বাবা”,
কিন্তু কে দেবে খাবার, কে মুছে দেবে এই ক্ষুধার দাগ?
জীবন এক কঠিন রাস্তা, কেবল চোখের জলে ভরা,
এই পথ পেরোতে কী লাগবে, জানি না, শুধু জ্বলে বেদনা!
হয়তো একদিন মরে যাব, এই পথেই শেষ হবে জীবন,
কিন্তু শোন, হে অবিচারের দুনিয়া, স্মরণে রেখো এই কষ্টের কথন।
কেন জন্ম দিলে এই শিশুর, যদি না দাও খাবারের অধিকার?
এই প্রশ্ন তোমার চোখে থাকুক, জ্বলুক শুধু ক্ষুধার আগুন,
মনে রেখো, এই কান্না এক অভিশাপ, এক বিদ্রোহের সুর।
ক্ষুধার্ত কান্না ভেসে যায় নৈঃশব্দ্যের সাগরে,
এই কি বিধি, নাকি নীরব প্রতিবাদ জ্বলন্ত আগুনে?