কে তুমি রজনির স্বপ্ন সম সাজে,
কুন্তল হাসনাহেনা মালা শোভিত?
কে তুমি যে প্রভাতকিরণে বিরাজে,
মাঠের হরিণী সম চঞ্চলিত?

কে তুমি মেঘের ছায়া, বাতাসে উড়িছ,
আঁচলে ঢাকিয়া তনু, ঈশান-সুন্দরী?
কে তুমি কদম ফুল, পূবে নাচিতেছ,
মধুপায়ী মাতাল হয় তব গন্ধে মরি?

কে তুমি পদ্মের পাপড়ি সম মুখ,
হাসিতে ফোটাও রবির কিরণ?
কে তুমি নদীর স্রোতের সম সুখ,
স্পর্শে দাও যেন বিদ্যুৎ স্ফুরণ?

কে তুমি তারার আলো অনন্তের বুকে,
ঈর্ষায় ঢাকিয়া চোখ করে ঝলমল?
কে তুমি নবীন পাতা বসন্তের সুখে,
স্পর্শে তব জাগে দেহে তৃষ্ণা অবিরল?

কে তুমি পূরবে, সোনার কাঠামো জ্বলে,
নিঃশব্দে চলিছ, ঢেউ খেলে কটিদেশে?
কে তুমি শেফালি গো অন্ধকার তলে,
চাঁদের কলায় হাসি ওঠে গো ভেসে?

কে তুমি পদ্মের কুঁড়ি ধরা বুকে,
জাগাও বাসনা কাপুরুষ মনে?
কে তুমি চঞ্চল নদী-স্রোত চোখে,
কাজল-মায়ায় বাঁধ প্রাণের সনে?

কে তুমি বসন্তের পাতে রৌদ্রের ঝলক,
যৌবন লাবণ্য ফোটে দেহের রেখায়?
কে তুমি লাল ওষ্ঠে ফলের রসে পুলক,
চুম্বন কামনা মম আকুল হিয়ায়?

কে তুমি দেবীর মূর্তি, পৃথিবীর রূপসি,
হৃদয়-অরণ্যে মম বসন্ত চিরন্তন?
কে তুমি মৃদু বায়ে দোলা শিউলির হাসি,
পা ফেলে চলো, বিভ্রান্ত করে হৃদয়-মন?