[প্রিয় কবি রীনা বিশ্বাস-হাসি (মৈত্রেয়ী কবি) স্মরণে]
জ্যোৎস্নার আলপথ ধরে রীনা চলে গেছে—
মেঘের শোকলিপি যেন আকাশের চাদরে
লেখা হয়েছে আজ রাতের অন্ধকারে।
তবুও মরা ফুলের গন্ধে ভরে ওঠে বাতাস,
মনে হয়, শীতের কুয়াশায় লুকানো কোন নিশ্বাস
তার কবিতার পাতা থেকে ঝরে পড়ছে ধীরে ধীরে।
দূরের মাঠে ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে কুয়োঘর,
তবুও পাখিরা জানে না, রীনা ফিরে আসবে না আর।
ঘাসের ওপর রক্তজবা ফুলগুলো হঠাৎ থেমে গেছে,
তাদের পাতায় ঝরে পড়া শিশির কি কান্না নয়?
নীরবতায় শব্দের বীজ রেখে গেছে সে,
চোখ বন্ধ করে যেই দেখলে, মনে হয়
একটা উদাস বাউলের একাকী সুর যেন ভেসে আসে।
তারা উজ্জ্বল— তবু আলোর গোপনে লুকিয়ে থাকা
অগুনতি দুঃখের দলা মাটির ভেতরে—
সে যেন রীনার ছায়া, ভাঙা ছন্দের টুকরো।
যতই লিখি, তবু কলম থামে,
কারণ সে নেই, অথচ এক মহাকাব্য হয়ে বেঁচে থাকে
তার ছোট্ট কবিতার পাঁজরে।
শেষে রাত্রির একান্তে মনে হয়—
এই শহরের সাঁই সাঁই বাতাস
রীনার শ্বাসের মতো বয়ে চলেছে।
হৃদয়ের কালো পোকামাকড়,
কাগজের পাতায় মৃত্যু ঘুমায়।
কলমের স্বপ্ন শব্দহীন কান্না,
রীনার কবিতা অন্ধকারে জ্বলে।