একটি মৃত শাখায় থেমে আছে সময়—
অথবা আমি, তোমার সঙ্গে, শীতালু গাছের পাশে দাঁড়িয়ে।
তুষারে ঢাকা সারা পৃথিবী,
আর আমি হাঁটছি, একা, তৃষ্ণার্ত,
কবিতার পুরনো কষ্টের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া,
যেখানে গাছের শাখাগুলির নিথর পাঁজরের মতো
সামান্য বাতাসেও হিমের গান শুনতে পাওয়া যায়।
চোখে যেন একরাশ চুপচাপ গীত বুনে যায়,
গাছের সাদা তুষারের স্তূপে ভাসে নিঃসঙ্গতার মুখ,
আর ঝরা পাতাগুলির স্তূপে দাঁড়িয়ে,
তুমি নেই, আমি আছি, অথচ পৃথিবীটা একতরফা,
শুধু হিমের প্রথম সূর্যরশ্মি
গাছের শাখায় গড়িয়ে যায়,
একটি গাঢ় তন্দ্রায় ঢলে, যেই তন্দ্রা
সবকিছু মুছে দেয়, কেবল শীত।

এমন কোনো ফুল নেই, যেখানে গলে গিয়ে জমে না প্রেমের শুকনো অশ্রু,
প্যানসি ফুলের কাঁপতে থাকা ঠান্ডা দেহ,
পৃথিবী কাঁপে, হারিয়ে যায় গভীরে,
তুষারে ঢাকা ফুলগুলোর মতো,
অথবা হিমেল রাতে তোমার চোখে হারানো ভালবাসার স্মৃতি।
ফুলের সুগন্ধ যেমন একে একে গায়েব হয়ে যায়,
এভাবেই পৃথিবী, এই শীতের শহর,
আমাদের ইতিহাসের মতো মুছে যেতে থাকে।

হিমাঙ্গ নদী যেন মুছে যাওয়া জীবনের গতি,
তারা চলে, থেমে থেমে,
যেন কখনো ছিল না কোনও আশা,
তুষারের মধ্যে নদী চুপচাপ চলে যায়,
আর তার ভেতর বয়ে যায় এক শূন্যতা,
যার প্রতিধ্বনি হিমালয়ের ঠান্ডা বাতাসে মিলিয়ে যায়।
একটা দুঃখ, এক অসমাপ্ত গান,
এবং হিমাঙ্গ নদীর জল,
যতটা দূরে চলে যায়, ততটা আমাদের অতীতের মূর্তি হয়ে ফিরে আসে।

তুমি, আমার প্রেম,
যেখানে তোমার হাতের সান্নিধ্য হারিয়ে গেছে,
হিমেল রাতে আমার হৃদয় জমে যাওয়া বরফের মতো,
এবং আমাদের কথা তুষারে হারিয়ে যায়,
শীতের মধ্যে আমরা,
একাকী,
হয়তো একমুঠো কষ্টের খোঁজে,
যেখানে কেবল শীত,
আর কিছু নয়।

তুমি নেই, কিন্তু হিমেল রাতের ভেতর
এটি যেন এক গভীর রহস্য হয়ে যায়।
একটি বাঘের মুদ্রা,
একটি অসমাপ্ত কবিতা—
বিষণ্ণতার কোনো শেষে নেই,
শুধু গাছের শাখায় বসা পাখিদের
ভাসমান অস্তিত্ব,
যাদের ডানা ক্ষতবিক্ষত,
যাদের স্বপ্ন
আমাদের মতো—
অদৃশ্য, শীতের মধ্যে ডুবে থাকা।

শীতের শূন্যতায়,
আমি আমার পথ চলি,
ধীর পায়ে,
আমার কাছে কিছু নেই,
শুধু শীত।
এবং তোমার মুখ,
যেখান থেকে সবকিছু হারিয়ে গেছে,
মুছে গেছে একসময়,
এমনই পৃথিবী,
এমনই আমাদের ভবিষ্যৎ।