স্বপ্নের জালে বাস্তব জড়ায়, মায়ার খেলা চলে,
কালের নদী বহে যায় তবু, প্রেম অটল তলে।

রাজশ্রী, এই ঝড়ের রাতে,
জানালায় যদি তুমি হাত বাড়িয়ে দাও তবে কী হয়?
আমার বুকের ভেতর ঝড়ও তোমার জন্যই, প্রিয়,
তোমার চোখের মেঘের আঁধারে ডুবে থাকতে চায়।

কী পাগলামি, রাজঋষি!
শহরের কংক্রিটের জঙ্গলে, কোন মেঘের ঝড়?
কোন মেঘের আঁধার?

মেঘের ঝড় আকাশে নয় শুধু, রাজশ্রী,
মনের আকাশেও হয়।
মনে পড়ে আমাদের প্রথম দেখার সেই ভেজা বিকেল।
আকাশের মেঘের মতোই আমাদের মন জুড়ে গিয়েছিল।

আমি তো ভেবেছিলাম,
শহরের ঝলমলে আলোয় দুটি অচেনা চোখের মিলন।

কিন্তু না, রাজশ্রী।
সেই মিলন ছিল মনে মনে আঁকা ছবির সঙ্গে দেখা।
আমাদের লেখা গল্পের নায়ক-নায়িকা মতো
আমরা  নিজেরাই হয়ে গেলাম।

কিন্তু, রাজঋষি, প্রতিটা গল্পের শেষে কি সুখ থাকে?

সুখ থাকে না, হয়তো,
কিন্তু প্রেমের গল্প শেষ হয় না, রাজশ্রী।
সময়ের স্রোতে ভেসে যায়, ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়ে,
তবু থেমে যায় না।

আমাদের প্রেমের গল্পও তাই
শহরের কোণে কোণে লেখা, কফিশপের কথায়,
বাসের জানালায়, ঝড়ের রাতের ফোনকলে।
এই গল্পের শেষ হয়তো নেই, রাজশ্রী,
কিন্তু থাকলেও, আমাদের ভালোবাসা থাকবে
মেঘের দেশে, প্রেমের হাওয়ায়।

ফোন কেটে দিল রাজশ্রী।
ঝড়ের মাঝে হারিয়ে গেল রাজঋষির শব্দ।
মেঘের ঝাপসা আকাশে এক ফোঁটা তারাও দেখা গেল না।
কিন্তু রাজঋষির বুকে ঝড় থামল না।
সেই ঝড়ের মধ্যেই মেঘের দেশে প্রেমের হাওয়া বয়ে চলল।

শূন্যতা ভরে অস্তিত্বের স্বর, নীরবতায় বাজে,
অনন্ত প্রেম মৃত্যুর পরেও, অমৃতের মাঝে।