স্বপ্নের নগরীতে হারিয়ে গেলাম, ভালোবাসার অজানা পথে,
ইরার স্মৃতি ধরে রাখি, অসমাপ্ত কবিতার মতো হৃদয়ে।

কী করে ভালোবাসি তোকে ইরা, গুনে শেষ হবে না?
যেমন আকাশ ভালোবাসে সূর্যকে, নিঃশব্দ, অতৃপ্ত, দীর্ঘশ্বাসে।
যেমন গঙ্গা ভালোবাসে সাগরকে, ছুটে চলে মিলনের আশায়।
যেমন রবীন্দ্রনাথ ভালোবাসতেন শান্তিনিকেতনকে, নিজের অন্তহীন কবিতার ঠিকানায়।

ভালোবাসি তোকে ইরা, যেমন চৈত্রের ঝড় সিঁদুর ছুঁড়ে দেয় পলাশ গাছে।
যেমন বর্ষার ঝরনা জাগিয়ে দেয় কাঙাল পৃথিবীর বুকে আশা।
যেমন শরৎ রাতে মন্থর সুর চলে জোছনার শান্ত মেঠোপথে।
যেমন শীতের সকালে কুয়াশার আঁধারে ফুটে ওঠে গোলাপের লাল লেখা।

ভালোবাসি তোকে ইরা, যেমন কলকাতার ট্রাম বাজায় তার ঐতিহ্যের গান।
যেমন বুক চাপড়ায় হাওড়া স্টেশন, দূরদেশের যাত্রীদের বিদায় জানিয়ে।
যেমন কফিহাউসে তর্কে মেতে থাকে স্বপ্নবাজ লেখকেরা।
যেমন বাদামতলায় ছুটে চলে রিক্সা, ঢুকে পড়ে সন্ধ্যার কোলাহলে।

ভালোবাসি তোকে ইরা, যেমন বইয়ের পাতায় হারিয়ে যায় মন, গল্পের মায়ায়।
যেমন পুরনো রেকর্ডে গুনগুন করে গান, প্রেমের অতীত স্মৃতি ফিরিয়ে।
যেমন ভিড়ের মাঝেও দুটো চোখ খুঁজে ফেলে, অজানা এক সংকেতে।
যেমন চুপির গভীরে লুকিয়ে থাকে অগোছালো ভালোবাসার কথা, অথৈ, অনাহুত।

কিন্তু ইরা, এই শহরের গল্পের মতোই আমাদের প্রেম কাহিনিও অসমাপ্ত।
হঠাৎ এক ঝলক ঝড় ঝাপিয়ে এসে ছিনিয়ে নেয় সব স্বপ্নের রঙ।
একটি ট্রাম লাইন পেরিয়ে দূরে চলে যায়, ফিরে না আর কখনো।
বাকি থাকে শুধু স্মৃতির অসমাপ্ত লেখা, বাতাসে উড়িয়ে দেওয়া এক টুকরো গান।

এই শহরের গল্পে থাকে সুখ, থাকে দুঃখ, থাকে অসমাপ্ত প্রেমের দাগ।
আমাদের গল্পও ঠিক তেমনই, নিঃশব্দে মিলিয়ে গেলো ভিড়ের মাঝে।
কিন্তু ভালোবাসা থাকবে বুকে, চিরকালের মতো, এক অসমাপ্ত কবিতার মতো,
গুনে শেষ হবে না, অনুভবেই মিলবে তার অন্ত।

কলকাতার গল্পে লেখা আমাদের ভালোবাসা, অসমাপ্ত অধ্যায়,
মনে রয়ে যাবে চিরকাল, অমলিন স্মৃতির ছায়ায়।