নিষিদ্ধ মৈত্রীর আকাশে জ্বলে অসহায় তারকা,
হিংস্র আইনের জালে বন্দি স্বপ্নের শারিকা।
কাবুলের রাতে শুনি কান পেতে অশ্রুর মর্মর,
বিধর্মী বন্ধুর হাহাকারে কাঁপে পর্বতশিখর।
হিন্দুকুশের বরফে লেখা অদৃশ্য ইতিহাস,
বামিয়ানের ধ্বংসস্তূপে ঘুমায় উদাস আকাশ।
নীরব প্রার্থনার স্বর
মিশে যায় ধূসর ধোঁয়ায়, বিলীন হয় অন্তর।
কে বলে বন্ধুত্ব নিষিদ্ধ? প্রেম কি আইনের দাস?
মানবতার সেতু ভেঙে দেয় কোন্ অমানুষ শ্বাস?
পাষাণ হৃদয়ে জমাট বাঁধা বিভেদের কালো ছায়া,
সহানুভূতির বীজ মরে, ঘেরা শুকনো মরুর মায়া।
গান্ধারের প্রাচীন মাটিতে নতুন যুগের ত্রাস,
বুদ্ধের হাসি মুছে যায় আজ, বাড়ে যারা হতাশ।
অসহিষ্ণুতার জ্বালা
দগ্ধ করে মানবতার শেষ সবুজ পাতার ডালা।
হিন্দু, শিখ, ইহুদি, খ্রিষ্টান- সবাই এক প্রাণ!
তবু কেন এ বৈরিতা? কেন এ মিথ্যা অভিমান?
যে দেশে একদা ফুটেছিল জ্ঞানের কুসুম দল,
সেথায় আজ শুধু বিষাদের নীল আঁধার অতল।
সভ্যতার দোলনায় দুলছে অন্ধকার ছায়া,
মানবিকতার শেষ আলোটুকু নিভে যায়, হায় হায়া!
হে বিবেক! জাগো আজ!
ভেঙে দাও এ বন্ধন, ঘুচাও এ লজ্জার লাজ!
আফগান মাটির বুকে আজও বয় করুণার হাওয়া,
প্রেমের বীণায় বাজে ধীরে সুরের নীরব দাওয়া।
মাজার শরীফের গম্বুজে ঘুমায় পবিত্র স্বপন,
হেরাতের মসজিদে আজও জাগে শান্তির অর্পণ।
বাঁধন ছেঁড়ার দিন আসবে, ফুটবে নতুন ফুল,
মানুষে মানুষে মিলনের পথে সরবে কাঁটার শূল।
জাগবে নতুন প্রভাত,
মৈত্রীর আলোয় ধুয়ে যাবে সব পুরনো আঘাত।