দিগন্তের শেষে—যেথা সরিষার ক্ষেত
হলুদ আভায় কাঁপে—শীতের নিশ্বাসে—
সেইখানে ঝরাপাতা অস্থির বৃক্ষের নিচে
বসন্তের স্বপ্ন আজ ফিরে আসে—আসে—

ধীরে ধীরে জেগে ওঠে—প্রভাতে।
শীর্ণ ডালে বসে থাকে শালিক একা
চেয়ে দ্যাখে; কাঁচের মতন শীত আর
ধূসর আকাশে মেঘের অদ্ভুত মুখ দেখা।

শুষ্ক ডালপালার নিচে যেন রূপার কণিকা
আর হীরকের মতো তুষারের বিলাপ;
কঙ্কালের ছায়া—স্তব্ধতা—
শীতল মাটির গন্ধ—কাশফুলের তাপ।

কয়েকটি কৃষক যেন দেবতার মতো;
মাঠের সন্তান তারা: জীর্ণ অবিরত;
চোখের কোটরে তার: অনাহারের ছায়া,
পায়ের নিচেতে মাটি: বরফের মতো শত।

সেখানে নিঃসঙ্গ বায়ু শীত হয়ে বৃষ্টি হয় ফের,
পাতাদের কম্পনেতে কোন স্বর নাই;
তবু তারা টের পায় বসন্তের মৃদু আগমনে
মরণের শেষে জীবন আসিবে ভাই।

সেইখানে একাকিনী কয়েকটি প্রজাপতি
শীতল আলোর নিচে ডানা আর রঙের সংকেতে
নিঃসঙ্গ; প্রকৃতির বুকে তারা উড়ে যায়
জীবনের আর মৃত্যুর সীমানা ছুঁয়ে আর উঠিবে না মেতে

গভীর বিষাদ ক্রমে টানিতেছে তাদের
তুষারের শয্যায় শুয়ে আর নিরুদ্ধ ঘুমে
স্বপ্ন নেই; এই শীত পৃথিবীর মাঠের হিমে দিয়ে
ওই শূন্য আকাশের নীলিমায়—তমসে

ক্রান্ত পথ নিয়ে যায় বিজন বনে—অন্ধকারে।
বসন্তের প্রতীক্ষার সোনালি আলোর দিন
শেষ হ'য়ে গেছে সব; পাখনায় মৃত্যুর কালো মেঘ,
পায়ের নিচেতে শুধু বরফ—কুয়াশা—শীত—লীন।