ভোরের মায়া-আলোয় পাখিরা কাকুতি করে,
বেলিফুলের গন্ধে ভিজে উঠছে বাতাস—
অথচ বারান্দায় পড়ে আছে একটা ছেঁড়া জুতো,
যার দড়িটা নেই,
জীবনের মতো অর্ধেক ছেঁড়া।
রান্নাঘরের চুলার ধোঁয়া
কুণ্ডলী পাকিয়ে ওঠে,
মনে হয় কেউ চুরি করে নিয়ে গেছে
একটা গল্পের শেষ লাইন।
তেলের শিশির মুখ খুলে পড়ে যায়,
মেঝেতে ছিটকে পড়ে
একটা নীরবতা, শূন্য ঘরের প্রতিধ্বনি।
তিন নম্বর চেয়ারটা অর্ধেক ভাঙা,
যার কাঠের রং হারিয়ে গেছে
প্রতিবাদের মতো একদা প্রবল
কিন্তু এখন বিবর্ণ।
তার পাশে রাখা লোহার কুঁজো ঘড়িটা
টিক টিক শব্দে সময়ের পাশে
একটা আগ্নেয়গিরির মতো নিঃশব্দ।
রাস্তার ধারে বালির স্তূপে বসে
দু’জন কিশোর খেলছে,
বালি দিয়ে বানাচ্ছে একটা শহর,
তার ওপর গাড়ি চলে গেলে
সবকিছু মিলিয়ে যাবে ধুলোয়।
মিলিয়ে যাবে ভোর, পাখি, গল্প, বেঁচে থাকা।
তবু মানুষ হাঁটে,
হাঁটে বাজারে, হাঁটে মসজিদে, হাঁটে মন্দিরে,
পকেটে একটা ছোট কাঁচি নিয়ে
সত্যকে কাটতে চায় খণ্ডে খণ্ডে।
চায় ছেঁড়া জুতোর দড়ি লাগাতে—
কিন্তু হাত কাঁপে।
তুমি বলো,
কে জঙ্গি?
কীসে লুকিয়ে আছে এই অন্ধকার?
জঙ্গি কে?
আয়নায় তাকাও, নিজেকেই দেখবে।