ও সে যে চলে আসে রক্তাক্ত রাত্রির তেহরানে,
গভীর চোখে আগুন নিয়ে,
হিজাবের ছিন্ন তারা হাতের মুঠোয়।
পথের মাঝখানে দাঁড়িয়ে চেয়ে থাকে,
দূরের আকাশে— যেন সেখানেই আছে
তার জন্য এক অন্য পৃথিবী, এক নতুন সূর্যোদয়।
এখানে সে খোলা পায়ে হেঁটে চলে,
তপ্ত পাথরে চিহ্ন রেখে যায়,
তার পদচিহ্নের পেছনে রক্তের এক দীর্ঘ পথ—
একটি ইরানের স্পন্দন।
একে একে খুলে ফেলে তার শরীরের আবরণ,
হৃদয়ের গভীর সত্য তার অনাবৃত চোখে।
যেন সে মৃদু গুনগুনিয়ে গান গায়,
যেন ভাঙা কণ্ঠে বলে যায়—
"এ আমার শরীর, আমার পতাকা;
এ আমার প্রতিবাদ, আমার ইচ্ছা।"
পুলিশ আসে, কঠোর হাতের স্পর্শে সে কেঁপে ওঠে,
মাথায় আঘাত, রক্তের বন্যা বয়ে যায়—
তবু মাটির ওপর নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে,
তার চোখের গভীরে স্বপ্নের নীল ছায়া।
মাসা আমিনির নামে উঠে আসা বিদ্রোহের ঢেউয়ে,
এ শহরে এক সাহসী আগুন জ্বলে—
পুড়ে যাওয়া হিজাব, ছিন্ন তারার প্রজাপতি—
সে এক নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখে।
তাকে যদি কুঠুরির অন্ধকারে পাঠানো হয়,
যদি ‘পাগল’ বলে তার স্বাধীনতা কেড়ে নেয়,
তবু তার নাম ছড়িয়ে পড়ে হাওয়ায়,
তার গল্পে রাত্রির আকাশে জ্বলে উঠবে তারারা—
তারাও তো পাগল, তারাও তো মুক্তি খোঁজে।
তাহলে বলো, কে তাকে থামাবে?
তেহরান জানে, পৃথিবী জানে—
সেই মেয়েটি, যাকে চেনো না তবু জানো,
সে সাহসের এক অন্য ইতিহাস।
পাগল? আহা, এমন পাগল যদি হতে পারত সব মেয়ে!