স্বপ্নহারা বাস্তবের অন্ধকারে,
হৃদয়ের দীপ্তি হারিয়ে মুখোমুখি নিরাকারে।

হারিয়ে ফেলেছি আমি, সব হারিয়ে ফেলেছি।
কেবল এই অন্ধকারে এসে
রিক্ত দু'হাত বাড়িয়ে
ডাকছি 'মা'।

কাঁটার জঙ্গলে আটকে আছি, নিশীথ রাত্রির নিস্তব্ধতায়,
আকাশ মৃত, তারাগুলো নিভে গেছে চোখের পাতার মতো।
ধ্বংসাবশেষের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে আছি,
এই ধ্বংস আমারই সৃষ্টি, আমারই পাপের ফল।

এই ছিল বাংলা, সোনার বাংলা, কবিদের স্বপ্নের রাজ্য।
কিন্তু কোথায় সেই সোনালি ফসল, কোথায় সেই মৃদু দখিনা পবন?
এখন চারপাশে শুধু ধোঁয়া, ধ্বংসের বিষাক্ত গন্ধ।
ধর্মের কাঠামো, ক্ষমতার লোভ, নীতির অবক্ষয় -
এদের বিষাক্ত আঙুলে গলা টিপে মরেছে সেই স্বপ্নের বাংলা।

মা, তুমি কোথায়? কোথায় সেই সোনালি সীমানা, নদীর ঝিলমিল ঢেউ?
এখন চোখের সামনে শুধু কালো নদী, বিষাক্ত জল, মরা মাছ।
এই নদীর বুকে ভাসে শুধু পচা ফুল, ভগ্ন মূর্তি,
আত্মহত্যার নিশ্চিন্ত হাসি।

কে বলেছিল স্বর্গ মর্ত্যে আছে?
এখানে তো শুধু নরকে, অন্ধকারের অতল গহ্বরে, আমার বাস।
কিছুদিন আগেও শুনতাম বাঁশির সুর, দেখতাম ফুলে ফুলে ঢাকা খেত।
কিন্তু কোথায় সেই সব? এখন শুধু কঙ্কালের শহর,
যেখানে দুঃখের ঘোড়া দৌড়ায় রাতের অন্ধকারে।

মা, আমি তোমাকে ডাকছি, ফিরিয়ে দাও সেই সোনার বাংলা।
যেখানে ধর্ম ছিল মানবতার মশাল,
ক্ষমতা ছিল জনগণের কল্যাণে,
নীতি ছিল পবিত্র,
আকাশ ছিল নীল, বাতাস ছিল শুদ্ধ।

ফিরিয়ে দাও সেই বাংলা, মা,
যেখানে আমি হারিয়ে ফেলি না সব;
যেখানে রিক্ত হাত না বাড়িয়ে,
আমি শান্তিতে ডাকতে পারি - 'মা'।

মা, তোমার কোলে আশ্রয় চাই,
এই ধ্বংসস্তূপে হারিয়ে না যাই।