নীলাভ রাতে শূন্যতার কাছে বসি একা—
চিরন্তনী বলে, আমি তোমার অনন্ত দেখা!
—যে ভালোবাসা জেগেছিল শ্রাবণের জলে,
মিলিয়ে গেল কালবৈশাখীর ঝঞ্ঝা-কোলে,
স্বপ্নের মতো মিশেছিলো প্রাণে প্রাণে তার;
কই সে আজ?—শূন্য বুকে শুধু হাহাকার!
কাঁদে যে মন নিঃসীম এক আকাঙ্ক্ষার তলে,
কাঁদে যে প্রাণ বিরহব্যথা-ভেজা চোখের জলে,
কাঁদে নিখিল নীরব প্রেমের শূন্য পাথার ছুঁয়ে,
তোমার হৃদয়-মরীচিকায় নিজেরে যায় ভুলে!
কোন্‌ সে দূর নক্ষত্রের পথ ধরে এলে,—
থামবে না তুমি চাঁদনি-ভেজা এ ভুবনতলে!
যাও তবে তুমি—উদাসীর এ পথ বেয়ে চলে
আমার হৃদয়-মন্দিরের দ্বার দিলাম খুলে
অজানা এক সুরের তালে—বেদনার মাঝে।
নিদ্রাহারা, দ্বারে আমার কার পদধ্বনি বাজে!
—কেন আবার ফিরে এলে তুমি স্বপ্নলোক থেকে!
অই বিরহের মহাশূন্যে চরণচিহ্ন রেখে
ছিলাম আমি নিঃসঙ্গতার মুখের পানে চেয়ে,
এলে কেন গো অশ্রুসিক্ত পথ খুঁজে বেয়ে!
থরথরিত প্রাণ, কেশে তব ছায়া নামে ঝরে,
বিষণ্ণ সুর বাজে যেন মৃত্যুর কণ্ঠস্বরে!
তোমার নয়নতারার সনে আমার চোখের তারা
মিশে গেল, তবু কেন এত দূরত্বের ধারা!
—হারিয়ে গেলাম চাঁদনি-ভেজা এ ভুবনতলে;
কাঁদে প্রেম—কে জানে—কবে মুক্তি পাবে বলে!