দেখিনু এক জ্ঞানী পণ্ডিত মহাশয়,
পরের বুলি আওড়ে সদাই রয়।
নিজ চিন্তা নাহি জাগে,
ভয়ে ভয়ে সদা থাকে,
"প্রভু" "প্রভু" রবে স্তুতি গায় অতিশয়।

একদিন সে পণ্ডিত চলিল দূর দেশে,
গুরুর বচন পুঁজি করি' পরম হরষে।
পথে ঘন ঘোর বন,
শুনি' ব্যাঘ্রের গর্জন,
"গুরু" "গুরু" রবে কাঁপে যেন তরাসে।

ব্যাঘ্র কহে, "ওরে মূঢ়, কি তব তত্ত্বজ্ঞান?
নিজ বুদ্ধি নাহি, শুধু পরের গুণগান?
যদি থাকিতো মগজ,
পাইতিস নিজ খোঁজ,
এবে মোর ভক্ষ্য হবি, এই তব বিধান।"

শুনি' পণ্ডিত কাঁপে থরথর করি',
মনে ভাবে, "কি করিব, যাই কোথা ধরি'?
যদি থাকিত সাহস,
খুঁজিতাম নিজ রস,
এবে তো মরণ শুধু, নাহি কোন তরি'।"

পরের বুলি, ওরে ভাই, কতকাল ধ’রে,
বন্দি রবি’ এই ভবে, আঁখি মুদে’ রে।
‘আমি’র ডঙ্কা তোলো,
নিজে আলোয় চলো,
জ্ঞান-সূর্য উঠুক হৃদয়-গগনে তেজে রে।