হেমন্তের শেষ বিকেলে সূর্য লাল পানের দাগ রেখে গেলো,
ছাদের কোণে ভাঙা শিকে ঝুলে থাকা সাদা শার্টে।
পোড়া পাতা ওড়ে বাতাসে—
এখানে কীসব কথা ছিল একদিন,
ভাঙা কাঁচে জমে থাকা দাগের মতো,
যা আলোয় ঝলকায়, কিন্তু মুছে যায় না সহজে।
চায়ের কাপ ধরে থাকা আঙুল কাঁপে,
শীত নয়, হয়তো কোনো স্মৃতি।
গলির মোড়ে জুতোর দোকানে
তালাচাবির ঝনঝন, বুটের নিচে চটজলদি পালানোর শব্দ।
জুতো কিনতে আসা মানুষেরা
শীতকালকে দেখে একজোড়া উষ্ণতার মতো—
অথবা নতুন শুরু।
তুমি ছিলে কোথাও—
ভাঙা হেমন্তের রাতের মতো,
যেখানে বাতাসে বাঁশির সুর মেশে
আর দূরে কুয়াশা ঢেকে দেয় সব।
তুমি কি তখন শীতের কথা ভেবেছিলে?
কাপড়ে মুড়ে রাখা পুরনো কমলালেবুর গন্ধ
আমাকে ভাবায়:
আমরা কি শীতের জন্য অপেক্ষা করছিলাম,
না কি হেমন্তে হারানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম?
মনে নেই,
আমি কী করে মুছেছিলাম তোমার ছবি,
অথবা তুমি মুছেছিলে আমার,
এখন
শুধু মনে পড়ে শীতের কালো জামা,
যখন বৃষ্টির বুলেট ছুটে আসে,
যখন শীতের হাওয়া কাঁচের পাতে আঁকা ছবি মুছে ফেলে,
পাতার জাহাজগুলি তখন ভাসে আমার মনের সাগরে,
আর আমি দাঁড়িয়ে থাকি একলা ঘাটে,
যখন ভোরের সাদা স্ক্রিনে তুমি ফিরে আসো,
‘এবার কোথা যাবে?’ বলে ডাক দাও।
এখন আর কোথাও যাওয়া নেই,
শুধু এই শহর, এই বৃষ্টি, এই শীত,
আর এই মনের খালি কামরা,
তোমার জন্য কান্না করে,
আমার জন্য কান্না করে,
আমি যখন তোমাকে হারিয়েছিলাম,
তখনই শুরু হয়েছিল এই শীত।