অস্তিত্বের কাঁটাতারে ঝুলে থাকে বিশ্বাসের ছায়া,
মালাউন শব্দের বিষাক্ত তীরে ভেসে যায় অস্তিত্বের মায়া।
চাঁদনির আঁচলে লুকানো কান্না শুনি,
ইতিহাসের পাতায় রক্তাক্ত হয় জীবনের খুনি।
বাংলার মাটিতে জন্মেছে যে ফুল,
তার পাপড়িতে লেখা অশ্রুর সমুদ্র অকূল।
দেবালয়ের ভগ্নস্তূপে বসে কাঁদে দেবতা,
মানুষের হৃদয়ে জাগে অমানুষের ক্ষুধাতুর ক্ষমতা।

প্রজাপতির ডানায় আঁকা স্বাধীনতার স্বপন,
ধর্মের নামে ছিন্নভিন্ন হয় জীবনের রূপন।
নোয়াখালির মাঠে ঘুরে বেড়ায় মৃত্যুর ছায়া,
পূর্ব পাকিস্তানের আকাশে ওড়ে রক্তের মায়া।
বাস্তুহারা মানুষের চোখে জমে থাকে জল,
দেশান্তরের পথে হারিয়ে যায় জীবনের দল।
একাত্তরের স্মৃতি আজও কাঁপায় হৃদয়,
মানবতার কবরে ফোটে ঘৃণার প্রদীপ নির্দয়।

শূন্য মন্দিরের প্রাঙ্গণে বাজে বিষাদের বাঁশি,
অন্ধকারের গর্ভে জন্ম নেয় আলোর প্রত্যাশী।
বিবেকের দংশনে জর্জরিত মানবতা,
ধর্মের নামে চলে অমানবিক ক্ষমতা।
জমির দখল নিয়ে যায় অন্যায়ের হাত,
ন্যায়ের বাণী হারিয়ে যায় অতলান্ত রাত।
শান্তির প্রতিশ্রুতি মিথ্যার আবরণে ঢাকা,
সত্যের মুখোশ পরে মিথ্যার কুহক জাগা।

বাঙালি হিন্দুর জীবন যেন শূন্যতার অভিশাপ,
প্রতিটি শ্বাসে অনুভব করে অস্তিত্বের তাপ।
জন্মভূমির মাটিতে আজ পরবাসী হয়ে,
বেঁচে থাকার লড়াই করে প্রতিনিয়ত ভয়ে।
অতীতের গৌরব আজ স্মৃতির পাতায়,
বর্তমানের যন্ত্রণা নিয়ে ভবিষ্যৎ চায়।
মানবতার স্বপ্ন আজ চূর্ণবিচূর্ণ ধুলায়,
নিঃশব্দ কান্নায় বাংলার কূল ভেসে যায়।