বৃষ্টির দিনে শহরের এক কোণে ছাতার ঝিলমিল,
ফুটপাতে দগ্ধ কাগজের পাঁজা,
আকাশের গায়ে দুঃখের সাদা চাদর মেলে কেউ
পৃথিবী বেচে ফেরে।
তোমাকে মনে হলো বালিশের নিচে হারিয়ে যাওয়া
পাঁচ টাকার নোটের মতো;
মনে হলো রেললাইনের পাশে পড়ে থাকা
কাটা তারের জীবনের গান।
তুমি বুঝবে না—
বস্তার ভেতর কাটা আলু আর পিঁয়াজের প্রেম,
বাইসাইকেলের টায়ারের ঘূর্ণি থেকে ওঠা ধুলোয়
খুঁজে পাওয়া নীরবতার ভাষা।
তোমাকে নিয়ে ভাবলে মনে হয় মাটির গন্ধে ভেজা
সস্তা গরম মশলার দোকান,
তুমি পেন্সিলের শেষ প্রান্তের মতো—
আলগা, ছোট, অথচ এত দরকারি।
আমাদের সংসার মানে শুধু মলিন বিছানা নয়,
এখানে ভাঙা কাপে চা ঢালার সময়
জলে ধুয়ে যাওয়া স্বপ্নও জমা হয়।
আমি দেখেছি বস্তার ছেঁড়া কোণায়
কোনো এক বাচ্চা মাটির খেলনা হাতে
আকাশের দিকে তাকিয়ে কল্পনায় জোড়া দিচ্ছে ডানা।
তোমার চোখে সেই আকাশ,
তোমার হাতে সেই খেলনা,
আমার ভাঙাচোরা মন নিয়ে তুমি
পৃথিবীর একলা গাছ।
তুমি জানো?
ঘুঘুর ডাকের ভেতর লুকিয়ে থাকে
আত্মসমর্পণের শব্দ।
তোমাকে দেখে মনে হয়
ছেঁড়া জামায় জুড়ে দেওয়া সেলাইয়ের গান,
অন্ধকারে এক কাপ চা হাতে বসে থাকা
ভিক্ষুকের অপেক্ষা।
তোমাকে আমি এর বেশি কিছুতে ব্যাখ্যা করতে পারি না।
শেষমেশ বলতে চাই,
তুমি আমার কাছে সেই গরিবগুরবোদের স্বপ্ন,
আমি তোমাকে গরিবগুরবোদের মতন ভালোবাসি।