চাঁদ আর পিঁপড়ের স্বপ্নে সূর্যাস্ত ভাঙে—
এই শহরের রাতজাগা রাস্তায় রক্তের ফেনা,
পুড়ে যাওয়া বাঁশির সুরে জেগে ওঠে শাপলা ফুলের
নির্জন আর্তনাদ, বিষণ্ণ কুয়াশা ঘিরে ধরে ঘুমন্ত ভোর।
কেউ জানে না কোন নীল সাপের ছোবলে নীল হয়ে যায়
মেঘের শরীর, কিংবা গাছেরা কেন হঠাৎ
অন্ধের মত ঢেকে ফেলে তাদের সবুজ চোখ।
বাতাসে ভেসে আসে পতাকার ছেঁড়া শব্দ—
ধন ধান্য পুষ্প ভরা এক জীর্ণ স্বপ্নের
জাল বুনে গেছে কেউ, মাটির নীচে লুকিয়ে রাখা
কিছু অন্ধকারের গানের ভাষা।
যে ছাত্র একদিন পতাকা হাতে তুলেছিল,
সেই হাত আজ অন্য রঙের ছায়ায় ঢাকা,
শীতল আগুনের গোলা ছুড়ে দেয় আকাশের দিকে।
এই তো সেই অজগরের মিছিল,
যারা রক্ত চেনে, অথচ রক্তের রঙ চিনতে পারে না।
তাদের পতাকা এখন আর দেশ নয়,
নিঃসীম অন্ধকারের ভিতর তারা গানে বাঁধে
পৃথিবীর পতন।
তারা জানে না—
গানটা কখনোই তাদের ছিল না।
যে মাটি একদিন স্বাধীনতার আলোয় ফুল ফুটিয়েছিল,
সেই মাটির নিচে জেগে ওঠে এক মৃত নদী,
জলের গা থেকে উঠে আসে নীরব অশ্রুরা,
আর ইতিহাসের দণ্ডহীন প্রহরীরা
প্রশ্নহীন চোখ নিয়ে দেখছে গুমোট আকাশের ভিতর
এক অদৃশ্য মহাকাশের কারাগার।
তারা জানে না—
জীবনের পাতা ঝরছে, রাতের ধুলোয় মিশে যাচ্ছে
সবুজ বিপ্লবের গল্পগুলো।
পৃথিবীর এই ছেঁড়া ছেঁড়া মানচিত্রে আজও
কেউ বুনছে সাপের নীল নকশা,
শব্দহীনতায় ছোবলের কান্না মিশিয়ে
তারা জন্ম দেয় নতুন পতাকার মিথ্যে বুদ্ধিজীবী।
তবু এই পথের শেষে,
যখন রাত্রি আর আলো দুই-ই হারায়,
মাটির নিচে কোনো বিস্মৃত ফুলের মন্ত্রে
কেউ হয়তো আবার গান বাঁধবে—
নীরবতা ভাঙবে সেই মহাকালের খসে পড়া পাতা,
যেখানে লেখা থাকবে
এক দেশ, এক রাত্রি, এক শেষ পতন।