হে বন্ধু, আজি এ দেশে,
অনাচারে, ক্লেশে,
কী দেখি এ ঘোর রূপ।
বিদীর্ণ এ হৃদয় কূপ?
শান্তির নীড় যেথা, ধর্মের মিলন,
সেথায় কেন এ হিংসার সমর ভীষণ;
অসহ্য এ তাপ,
নিদারুণ অভিশাপ।
হে ভ্রাতা, কী শুনি আজি এ ক্রন্দন ধ্বনি,
অসহায় নরনারী, আকুলিত বাণী।
কী দেখি এ ঘোর ত্রাস,
অমানবিক প্রয়াস।
গৌরবের চিহ্ন যেথা, শ্রদ্ধার আসন,
সেথায় কেন এ পশুর মতন;
অসহ্য এ চাপ,
নিদারুণ পরিমাপ।
কী মোর শকতি আছে এ দৃশ্য যে হেরিব আমি হায়,
হোক মন্দির, হোক দেবালয়,
শুধু ভয়, শুধু ত্রাহি ত্রাহি রব,
কেন এ নিষ্ঠুর উৎসব,
একদিন যবে,
নিশ্চিত থামিবে এ অন্যায় সবে।
নিজ হাতে তব যাহা গড়ি তুলেছিলে,
তাহা কেন ভাঙিয়া দিলে,
অবিচারে,
অনাচারে,
কেন এত ঘৃণা, কেন এত অহংকার তরে।
তার চেয়ে যবে,
অন্ধকার নিশি হবে,
নিরব রজনি আসিবে যখন,
নিভে যাবে সব কোলাহল তখন,
অজানা বেদনায় হৃদয় উঠিবে ভরি,
নীরবে অশ্রুবারি,
পথহারা সেই ব্যথা,
রবে চিরদিন গাঁথা।
যেতে যেতে জীবনের পথে,
অসহায় আর্তনাদ রবে সাথে,
দেখিবে সহসা—
মানবিকতার ক্ষীণ আশা,
একটি করুণ সুর কাঁপি থরথরে,
ছোঁয় শুধু বেদনার গভীরে,
সেই সুর, অজানা সে বেদনা,
সেই তো শুধু রবে চেতনা।
আমার যা শ্রেষ্ঠ ছিল, সে তো শুধু বিশ্বাস, প্রেম,
মানবতার অমর হেম।
বলে না আপন নাম, শুধু নীরবে কাঁদে,
অসহায় আর্তনাদে।
সেথা পথ নাহি জানি,
সেথা নাহি যায় হাত, নাহি যায় বাণী।
ভ্রাতা, তুমি সেথা হতে আপন অন্তরে,
অনুভব করো ধীরে,
না-চাহিতে না-জানিতে সেই বেদনা,
সেই তো শুধু রবে চেতনা।
আমি যাহা দিতে পারি সামান্য সে বাণী—
হোক ক্ষমা, হোক শুধু শান্তিখানি।