ওগো অন্তরদেব, এ পোড়া হৃদয়খানি,
কাদা-মাখা পদ্ম যেন, মলিন, ম্লানি।
সহস্র বাসনা-কীট নিয়ত কুঁড়ে খায়,
অহং-বিষে জর্জরিত, শান্তি নাহি তায়।
দয়া করি’ তারে তুমি করো নাথ, মার্জনা,
বিকশিত করো, যেন হয় নবীন চেতনা।
কালিমা ঘুচায়ে দাও, জ্যোতির্ময় করে’,
সুন্দর করো, যেন প্রেম-সুধা ঝরে।
কামনার কণ্টকবনে পথ হারাইয়া,
ভ্রান্ত এ মন ফেরে দিগ্বিদিক ধাইয়া।
লোভের মরীচিকা পিছু ধায় অনিবার,
তৃষ্ণা মেটে না কভু, শুধু হাহাকার।
হৃদয়ের মন্দিরে তুমি এসো, হে অন্তরযামী,
জ্ঞান-দীপ জ্বালো, ঘুচাও এ তিমির-রাশি।
বৈরাগ্যের বারি সিঞ্চিয়া করো শীতল,
প্রেমের পরশে যেন হয় সে উজ্জ্বল।
হিংসা-দ্বেষ-কলুষিত এ চিত্ত আমার,
পাপ-পঙ্কে নিমজ্জিত, নাহি পরিত্রাণ আর।
তোমার কৃপা-বারি বিনা কে করিবে ত্রাণ,
তুমিই তো গতি, তুমিই তো শেষ আশ্রয় স্থান।
হৃদয়-সরোবরে ফুটাও প্রেম-শতদল,
আনন্দ-মধু ঝরে যেন অবিরল।
তোমারি চরণে যেন থাকে অটল ভকতি,
ইহাই তো জীবনের পরম মুক্তি, পরম গতি।