অলীক সন্ধ্যার আলোয়, যখন পৃথিবীর সবুজ-নীল ব্যঞ্জনা যেন শূন্যতায় মিশে যায়
আকাশের প্রাচীন পাণ্ডুলিপি খুলে যায় ধীর ছন্দে—
দীপ্ত তিতিরের ডানায় ঝুলে থাকে অযুত নামহীন ভাষার পাঠ
যেখানে জ্ঞানের ঝরনা ঝরে বুনো অরণ্যের গোপন ঝিলের কাছে।
অবিনশ্বর অধ্যায়গুলি ভাসে কালের তরঙ্গে—
মনে হয় যেন প্রতিটি শিক্ষকের হৃদয়ে জেগে ওঠে
অসংখ্য অভিসার, স্রোতের মতো গাঢ় হয়ে বয়
অমৃতের মতো কথা, যা সময়কে বাঁধে শেকলে।
তারা যেন পৃথিবীর হারানো দিকগুলিকে মেলে ধরে
দ্রোহের মতো, স্বপ্নের মতো, মুক্তির মতো—
প্রাচীন নিঃশব্দে নিত্য নতুন শব্দের সঙ্গীত,
প্রাচীর ভেঙে পড়া রৌদ্রের প্রান্তিক আলোয় ফুটে ওঠে চিরন্তন চিত্রপট।
শিক্ষকেরা যেন ওই দিকভ্রান্ত আলোকবর্তিকা
যাদের আলোর ছোঁয়া হিমালয়ের চূড়ায়, আর সমুদ্রের অন্ধকার গহ্বরে
তাদের হাতে জন্ম নেয় নতুন দিনের সূর্য—
নির্মিত হয় ভবিষ্যতের সেতু, চেতনার অপরূপ নদী বয়ে যায় দিগন্ত ছাড়িয়ে।
তারা রচনা করে প্রতিদিনের প্রার্থনা—
যে প্রার্থনায় কাঁপে মহাকালের অলিখিত নিয়ম,
যেখানে প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসে জ্বলে ওঠে চিরন্তন বিদ্যুতের শিখা
আর সে শিখায় জীবনের সমস্ত রাত—সব প্রশ্নের জবাব মেলে
অজানার পথে তারা চলে এক নির্লিপ্ত ধ্যানমগ্ন সাধকের মতো
অদৃশ্য নক্ষত্রের দূরত্ব ধরে রেখে—
মুখ তুলে তাকায় আকাশের ছায়া, আর জাগায় পৃথিবীর সত্তার অন্তর্নিহিত আলোর।
[আজ, ৫ অক্টোবর, বিশ্ব শিক্ষক দিবস]