কবিতার বিষয় সামাজিক, রাজনৈতিক, প্রেম , বিরহ , আত্মজৈবনিক , জীবনমুখী , সমসাময়িক বিভিন্ন রকমের ই হতে পারে I যেকোনো বিষয়, যেকোনো ফর্ম , যেকোনো পদ্ধতি কবি রিপ্রেসেন্টেশন টুল হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন এবং এর পূর্ণ স্বাধীনতা ও লাইসেন্স একজন কবি বা লেখকের আছে I এখন এক ঝলক আত্মজৈবনিক বিষয়টি নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে দেখা যাক I আত্মজীবনীমূলক কবিতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রসদ কবিতায় কবির উপস্থিতি বা ইনভল্ভমেন্ট| তবে প্রায়শই উত্তম পুরুষের ব্যবহার কবির ইনভল্ভমেন্ট কে স্পষ্ট না ও করতে পারে I যাইহোক উত্তম পুরুষ ব্যবহার না করেও ইনভল্ভমেন্ট স্পষ্ট করা যেতে পারে এর ও উদাহরণ আছে ঢের I কবিতায় ইনভল্ভমেন্ট দরুন আত্মজীবনীমূলক কবিতা শুধুমাত্র আত্মজীবনীমূলক কবিতায় সীমাবদ্ধ না থেকে বরং হয়ে ওঠে সমাজসংস্কারমূলক , রাজনৈতিক, জীবন মুখী এবং রাখে যেকোনো বিষয় কে ট্রান্সেন্ড করার ক্ষমতা I আমি যেহেতু এই সমাজেরই অংশ , সমাজ ও রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত হই এবং প্রভাবিত করি সুতরাং সমাজ সংস্কারমূলক ,রাজনৈতিক বা আলাদা কোনো ফর্মকে নিয়ে আলাদা ভাবে ঘাটাঘাটি করা নিষ্প্রোয়জন বলে মনে করা যেতে পারে I নিজেকে আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে , নিজের রহস্য উন্মোচনের মাধ্যম ঐ বিষয় গুলি আপনাআপনি অমোঘ নিয়মে প্রতিফলিত হতে থাকে এবং হতে বাধ্য I আমি এবং আমারই দ্বারা রিপ্রেসেন্ট হবে এই সমাজ , এই সভ্যতা I হাঙরি আন্দোলনের অন্যতম শ্রষ্টা কবি প্রদীপ চৌধুরীর 'কবিতাধর্ম'এ কবিতায় আত্মজৈবনিক উপাদান এবং ইনভল্ভমেন্টের সপক্ষে "আমি" র যে সংজ্ঞা তিনি অঙ্কিত করেছেন তা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করি "আমি কোনো জেনারেশনের নই........স্থাবর অস্থাবর প্রাণিজগতের সকলের শিরা - উপশিরা চেতন - অবচেতন অবসেসড আত্মার এক অলৌকিক সামগ্রিক আমি এক খুবই ছোট অথবা অতিশয় প্রতিবিম্ব মাত্র I " আমার কবিতায় আমি লিখি শুধু আমার আত্মজীবনী যাতে নিহিত রয়েছে এই গ্রহের মানুষের সমগ্র জীবন " ( প্রদীপ চৌধুরী , সাক্ষাৎকার ; দেনিস এমোরিন)
আরও লক্ষণীয় বিষয়
শুধুমাত্র এই গ্রহ নয় এই ব্রহ্মাণ্ড র আমি যেহেতু একটি অংশ, সেই অর্থে আমি সমগ্র বিশ্বব্রহ্মান্ড কে ও প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছি মানব সভ্যতার প্রতিনিধি এবং প্রতীকী হিসাবেই I
" ওপরে তাকাও !তাকাও ভেতরে ! ঐ চন্দ্র সূর্য গ্রহ নক্ষত্র / উল্কা আর ধূমকেতু গুলি যখনি নাচছে/
ব্রহ্মাণ্ড নিহিত হচ্ছে তোমার ভেতর /
মহাবিশ্ব কি লীন হয় তোমার ভেতর ? হয় না?"( কবিরাজ জর্জ ডাউডেন; 'নাচে ব্রহ্মাণ্ড' কবি সেলিম মুস্তাফা কর্তৃক বঙ্গানুবাদ থেকে গৃহীত )