নেশাখোর আমি বহু দেখেছি
আমার পাশের রুমের ছেলেগুলো
গাঁজার কল্কে হাতে কি পরম সুখে দিত একেকটা টান।
টিএসসির পাশের ঊদ্যানে
প্রতিদিন বসে গাঁজার হাট-বাজার
কি বিদঘুটে গন্ধ, অসহ্য লাগত আমার।
শাহবাগের পিকক অথবা সাকুরা বারে
কাছের কিছু মানুষের অবাধ চলাচল দেখেছি
এলকোহলের ঝাঁঝালো গন্ধ
ছুঁইয়ে পড়েছে তাদের মুখ থেকে, শরীর থেকে।
কলেজ পাঁড়ার মাস্তান ছেলেগুলো
ডান্ডির বোতলের মেলা বসাত
উন্মাদনাময় রাত জেগে।
কমলাপুর স্টেশনের ছেলেগুলোকে দেখেছি
নিমগ্নচিত্তে দম ফেলে যায় পলিথিনের ভেতর।
আমাদের পাঁড়ার সেই মাতাল
ভাত পঁচা মদের খাদক, তার মাতলামি দেখেছি।
একদিন একটা লোক এসে মামা ডেকে বলল
দশটা টাকা দিবেন আমারে।
ময়লা শার্ট, এলোমেলো চুল, খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি
তার হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে, শরীর কাঁপছে।
কি করবে টাকা দিয়ে?
ভাত খাব মামা।
ভাত না ছাই, খাবিতো পুরিয়া
যা, ভাগ শালা; টাকা নেই।
রুমের ছোট ভাইকে দেখতাম রাতের পর রাত সজাগ
অত:পর লাগাতার দিন-রাত ঘুম।
আমি ভাবতাম কেমনে পারে!
পড়ে জানলাম সে ইয়াবার জোরে।
নেশা আমি বরাবরই ঘৃনা করতাম
সেই আমি আজ নেশার ফাঁদে।
তুমি যে এত নেশার আঁধার
নির্ঘুম রাত যায়, দিন যায়
হাত কাঁপে, পা কাঁপে, শরীর কাঁপে
হৃদপিন্ডটা এত বেশি কাঁপে
মনে হয় দেহ ছেড়ে বেড়িয়ে আসবে।
অথচ তোমার একটু কথা, একটু শরীর
অনুভূতির একটু ভাগাভাগি সব থামিয়ে দেয়।
ডোপামাইনের ক্ষরণ বেড়ে যায় মগজে
সবকিছু মধুর লাগে, আহা কি সুখ।
আজ আবার মামা বলে ডাকল
আরেকটা লোক, একি চেহারার।
আমি বললাম, টাকা লাগবে? পুরিয়া খাবে?
এই নাও টাকা, শান্তিমত পুরিয়া খাও।
দোয়া করো, আমার পুরিয়াটাও যেন পাই ভাগে।
উৎসর্গ- দূরের ঐ সাদা তারাকে।