অঞ্জনা,তুমি শুনতে পাচ্ছ?আমার এ করুণ আর্তনাদ
তোমার বহিঃকর্ণ-মধ্যকর্ণ ভেদ ক’রে
পোঁছাচ্ছে কি তোমার ধ্বনি-প্রতিধ্বনির কেন্দ্রস্থলে ?
নাকি তুমি এখনও অভিমানে তোমার কানে কালো পাথরে
মোটা দেওয়াল গেঁথেছো;গুঁজে রেখেছো কোনো শব্দ অন্তরক
তোমার বাহ্য শ্রবনযন্ত্রের গোড়ে ?
আমি বুঝতে পারি অঞ্জনা—বুঝতে পারি তোমার অভিমান্!
দিনের পর দিন তোমায় আমি করেছি অবহেলা—
আমার ধরাসংসারের সবাই তিলে তিলে
তোমার প্রাণটাকে তোমারি প্রাণের বাহিত মাটির রসদে
করেছে ছোটো ছোটো বিভাজন—এক সুতাসম নলে
বায়ুরন্ধ্র দিয়ে রেখেছে খালি তোমার ওই গলে;
তোমার প্রাণের শ্বাস-প্রশ্বাস এই বাতায়নেই আজ চলে
নীরবে নীরবে!
তোমার অকৃত্রিম ভালোবাসাকে সবাই ভুলে
আমরা খেলছি মহাকালের এক অপরিকল্পিত প্রগতির খেলা;
এ খেলায় একদিন আমি জানি হয়তো যাবে তোমার প্রাণ!
এ মায়ার ধরাসংসারে তোমায় ফিরে পেতে অনেক প্রতিবাদ
করেছি—শয়েছি শত হাজারো অত্যাচার;
আমার আপন সহযাত্রী দিয়েছে কত বেদনার শব্দাঘাত!

আমি আজও আশাবাদী-তুমিও রাখো আশ!
একদিন তোমার আঁচলে এঁকে দেব তৈলচিত্রের
শ্যামল বনানী অথবা প্রকৃতির নিয়মে জন্মিবে নব তৃণ-ঘাস—
বহুবছর ফেলে রাখা তোমার ওই জরাজীর্ণ উর্বর আঁচলে ৷
পাখি সেই ‘খঞ্জনা’ গাহিবে গান খুলে তাঁর প্রাণ
তোমার প্রাণের পাশে—
সেও হৃদয়ে রোমন্হিবে এ শ্যামলের নিবিড় টান্ ৷
তুমিও আপন মনে চলিও তোমার জীবনপথ,
রচিও আবার ভালোবাসার সেই ধরাসংসার—
যা হারিয়েছিলে আমাদের এ বিশাল সংসারের
নট-নটীর বিচারহীন প্রগতিবিন্যাসে ৷
আমিও আমার এ তাজা লালসার হৃদয় দিয়ে দেব তোমারে!
হৃদয়ে হৃদয় মিলিয়ে চলিব ভেসে একসাথে
এ জলঙ্গী হ’তে—শহর-নগর-গেরাম পার ক’রে
মিলিব শেষে তোমার সখী চূর্ণীর মৃদু ধারার সাথে ৷
                  *********
                        ***
                          *