সনেট ১৯৬, করোনা – ১১
প্রেম তবু ভাষা পায় তেজোদ্দীপ্ত তরুণের রক্তের আখরে,
এ এক মায়াবী জুয়া, প্রজ্বলিত সময়ের স্বভাবী বিজয়।
গভীর নিপুণতায় নারী তুমি খুঁজে নাও স্বীয় পরিচয়,
শৌর্য বীর্য ক্ষমতায় কত নর লেখে নাম আপন স্বাক্ষরে,-
আমি শুধু আলগোছে ক্ষয়ে যায়, ক্ষমাহীন সময়ের জ্বরে।
নারী, তুমি আস্থা নও, শব্দ নও - ভ্রান্তি নও, নও পরাজয়,
নিমেষে উপেক্ষা করো অগাধ, অতল প্রেম। এই সমুদয়
জগতের গোপনীয় কারণ কে ধরে আছো বদান্য জঠরে।
সু-বিশাল শিশুটিকে এনে দিতে নিরাপদ, সুরক্ষিত বাসা;
আদি থেকে এ অবধি দ্বিধাহীন জ্বেলে গেছ হৃদয়ের ধুপ,
জননীর গরিমায় অতীত নিয়েছ মুছে ভোরের মতন।
আমি তো করিনি কোন অভিযোগ! করিনি তো কঠিন জিজ্ঞাসা!
তবু কেন বার বার আমার জানাযা করে আমার স্বরূপ?
আমারই রক্তে কেন রেঙে ওঠে চিরদিন শিমুলের বন?
সনেট ১৯৭, করোনা – ১২
আমারই রক্তে কেন রেঙে ওঠে চিরদিন শিমুলের বন?
প্রশ্নগুলো জমা হয় প্রথাগত অবয়বে কালের নথিতে।
আমি আসি, আমি যাই আবার আসবো বলে। এই পৃথিবীতে
একচ্ছত্র ক্ষমতার অর্ঘ্য নিতে প্রকৃতির এতো আয়োজন।
বন্ধু, আমিও গেয়েছি একত্রে বৃষ্টির গান, রেখেছি এষণ
বটের বিশালতায় পীরের দেউড়ি ধরে। চৈত্রের থলিতে
শুধিয়ে দিয়েছি ঋণ ঘর-ভোলা সড়কের অবাধ্য ধূলিতে;
তবু আমি মুছে যায়! পৃথিবীর পথে যেন রাখিনি চরণ!
হে ঘুড়ি ওড়া আকাশ! হে নদী! হে বৃদ্ধ বট আমার আশ্রয়!
তোমরা বোঝালে কেন, শিশুর চেয়ে সুন্দর আর কিছু নেই?
আমি চাইনি সুখের সুদূরের নীল চিল, চাইনি প্রবোধ প্রশ্রয়,
বাঁধিনি নরম সুতো - জল হতে পাখা মেলা ফড়িংয়ের পায়।
সেই সব ঝরা দিন থিতিয়ে তলিয়ে আছে দূর অতীতেই,
আমি শুনি সেই শব্দ, খুঁজি এই তুচ্ছতায় - সেই পরিচয়।
এটি সনেট পরম্পরা বা Sonnet Sequence ধারার কবিতা যেটি ১৫টি সনেটের গুচ্ছ। (Lot)। সনেটগুলি লেখা হয়েছে সনেট করোনা (Sonnet Corona) বা ক্রাউন অব সনেট (Crown of Sonnets) রীতিতে।