সনেট ১৯২, করোনা – ৭
ধৃতি রবে কমনীয় সবুজকে ছুঁয়ে গেছে এই অসীমতা,
নাহয় হলোনা সেথা ভবঘুরে বাউলের দুপলক ঠাঁয়!
কবিতাও ম্লান হয়, সময় আঁচড় কাটে ললিত কায়ায়,
কত ঝড়-বৃষ্টি-রোদ পাড়ি দিয়ে ঝরে যায় হরিদ্বর্ণ পাতা,
কতেক মুহূর্ত থাকে, এ জীবন অবহেলা করে অমরতা।
বিভোর রাতের শেষে দেহহীন ইচ্ছে থাকে যথাযথতায়-
হয়ে আনগ্ন কঙ্কাল, সীমাহীন ছায়াপথে কতেক লুকায়।
মৃত্যু কি কোনদিনও জেনেছিল জীবনের সেই কথোকতা?
তুই আমি এখানেই গড়ে ওঠে ইতিহাস পাথরে লেখার।
ঘামে ভেজা খোলা চুল দুলে ওঠে শেষবার, ঢেলে দেয় সাকি-
সেই পুরাতন সুরা, ভারি হয় খড়্গহস্ত যা ছিল দুর্বার।
পুরাতন শিলাচিত্রে আঁকা শেষ জনপদ পেরিয়ে আবার-
দূর কোন ভবিষ্যতে,- কিছু নেই বন্ধু! সব আলেয়ার ফাঁকি!
যা ছিল তা দিয়ে গেছি স্বত্ত্বহীন, নেই কোন প্রতিদান তার।
সনেট ১৯৩, করোনা – ৮
যা ছিল তা দিয়ে গেছি স্বত্ত্বহীন, নেই কোন প্রতিদান তার।
তিনভাগ জলরাশি ক্ষুধাকে ফেনিয়ে নিয়ে মাতাল যখন;
গিলে নেয় বেলাভূমি, ফিকে হয় হৃদয়ের সবুজ প্লাবন,
স্থান রাখি ওষ্ঠাধরে, - বলা না বলার মাঝে একটু হাসার।
আমি যেন আঁধারের কাপালিক অভিশাপ বিনাশ হানার,-
যেখানে তর্জনী রাখি সেখানেই গড়ে ওঠে তৃতীয় ভুবন,
যেখানে পিপাসা চায় মুক্ত হতে সেখানেই নিস্তব্ধ শ্রাবণ,
প্রখর দুপুরে পুড়ে স্বপনের আত্মাহুতি দেখি প্রতিবার।
আতশ মরুর বুকে সবুজের স্বপ্নটাকে সংগোপনে রাখি।
নিঃসঙ্গ নক্ষত্র-তলে - মায়াবী ছায়ায় ভুলে যতবার থামি,
পড়ে থাকে বাক্যহীন নামঞ্জুর দাবি আর আমি মুখো-মুখি ।
হাজার যুগের ঘুম ভেঙ্গে যায় চুপিসারে অকস্মাৎ আমি,-
বেড়ে উঠি আদি থেকে, প্রথম ক্ষতের মতো পৃথিবীকে দেখি;
সে মুমূর্ষু কলেবরে ঘুরে চলে হাতে নিয়ে অবাক আগামী।
এটি সনেট পরম্পরা বা Sonnet Sequence ধারার কবিতা যেটি ১৫টি সনেটের গুচ্ছ।(Lot)। সনেটগুলি লেখা হয়েছে সনেট করোনা (Sonnet Corona) বা ক্রাউন অব সনেট (Crown of Sonnets) রীতিতে।