সনেট ১৯০, করোনা – ৫
মাটির অজান্তে কতো কুহেলিকা ঝরে গেছে - থেকে যাবে রাজ,-
শুনবেনা কেউ তার আলোকের ফাঁকে ফাঁকে পতনের রোল।
এতো এতো মানুষের উল্লসিত কোলাহল, হাওয়ার বদল,-
কিছুই দেখিনি তার, আজন্ম বধির এক শুনিনি আওয়াজ।
দেখিনি সে চোখ থেকে কাজল সরিয়ে রাখা সমুদ্রের লাজ,-
অথচ, বেকুব আমি, জল চেয়ে মেখে গেছি দু’পায়ে পলল।
তেমন উপেক্ষা নয়, নির্বাপিত চোখ তার হতাশ, সজল,
নিশীথের রানী যেন বিফল রজনী শেষে খুলে ফেলে সাজ।
জানিস? এখন আমি,- অবিশ্বাসে আস্থা রাখি প্রবল বিশ্বাসে।
বারবার চোখ মুদে চেখে দেখি- (এই চোখ আমার তো ঠিক?)-
সুদূরের ভ্রমে আঁকা অদৃষ্টপুরূষ থাকে - বর্ণান্ধ আশ্বাসে।
অমৃতের দাবি নিয়ে আকণ্ঠ তৃষ্ণার জল সুতীব্র উল্লাসে-
হেসেছিল, সবটুকু লোকসান নিয়ে গেছে দেউলে বণিক,
পারেনি বিকোতে খর মরুভূমি জলধির জল ভালোবেসে।
সনেট ১৯১, করোনা – ৬
পারেনি বিকোতে খর মরুভূমি জলধির জল ভালোবেসে,
পারেনি কপোলে আঁকা স্নেহের আজন্ম দান - দিতে নির্বাসন।
পিতার ঘামের দায় কমজোর কাঁধে নিয়ে জ্বালিয়ে ভুবন-
দেউলিয়া বুকে তার ভরে নিয়ে অসারতা ফিরে গেছে হেসে।
নিরস্তিত্ব অনুভূতি, ভবিতব্য অনিশ্চিত, আশ্বিনের কাশে-
ঢেউ তুলে চলে গেছে শরতের রথ, তবু, বিবর্ণ জীবন-
ফেনিল আকাশে বাঁধে ক্ষণিকের খেলাঘর, মেঘের মতোন-
জল হয়ে বারিবেগে অঝরে ঝরবে বলে আসবুজ ঘাসে।
আঙুল-বন্ধনী থেকে খুলে নেয়া আঙুলের এই স্থবিরতা,-
সমুদয় জনপদে আমাকেই করে দেয় ব্যক্তিগত, একা!
পৃথিবীর ভিড় ঠেলে করে চলি উপভোগ সেই নির্জনতা।
বন্ধু, হয়তো সময় নেই আর, খর রোদে কিছু কোমলতা,
হয়তো বা জ্বলে যাবে, জলহীন থেকে যাবে কিছু উপত্যকা,
ধৃতি রবে কমনীয় সবুজকে ছুঁয়ে গেছে এই অসীমতা।
এটি সনেট পরম্পরা বা Sonnet Sequence ধারার কবিতা যেটি ১৫টি সনেটের গুচ্ছ।(Lot)। সনেটগুলি লেখা হয়েছে সনেট করোনা (Sonnet Corona) বা ক্রাউন অব সনেট (Crown of Sonnets) রীতিতে।