বুড়ো বৃক্ষের নড়বড়ে শিকড়ে কড়া নাড়ে
সময়ের শেষ বরাদ্দ।
কবে কতো পথিক মেখেছিল ছায়া,
পাখিরা গেয়েছিল বসন্তের গান,
কতো ফুল ঝরে গেছে; থরে-বিথরে রেখে গেছে অপেক্ষা,
আবার কতেক,
পূজার বেদিতে উঠে অক্লেশে ভ্রমরকে করেছে অবহেলা।
এই বৃক্ষতলেই; রাখালিয়া বেণুর সুরে
রাধিকা ভুলেছে পথ।
সে সব আজ নগণ্য উপকথা, তীব্র জরের প্রলাপের মতো।
সময় আজ বড়ো অসময়।
পাতাহীন শাখা গুলোর এলোথেলো ছায়ায়;-
জীর্ণ জননীর দিবা-নিশি দুঃস্বপ্নের দীর্ঘশ্বাস!
ছত্রাকে খেয়ে গেছে ভরসার অন্তিম বীজের
অঙ্কুরোদ্গমের স্বপ্ন।
ভাতের হাড়ির ঠনঠনে শব্দে আঁচকে ওঠে ভবিষ্যত!
জননীর শরীরে এক জীবন বেঁচে থাকার ক্লান্তি।
রক্তশূন্য হৃদয়ের গহ্বর থেকে বেরিয়ে আসা
শব্দহীন বাক্য গুলো হু হু রবে ধ্বনিত হয়-
ভারি হওয়া বাতাসে।
জন্মভূমির জন্ম-সুখে উচ্ছ্বসিত কিছু অবিবেকী প্রাণ;
বার বার শুঁকে যায় কবেকার ঘি-এর গন্ধ।
স্বেচ্ছাচারিতার গায়ে আজ সার্বভৌমত্বের উত্তরীয়।
ললাটে মধ্যমা ঠেকিয়ে ঠুকে দেয়া হয়েছে সিলমোহর
জীর্ণ জননীর কণ্ঠে, গ্রীবায়, ওষ্ঠে।
কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে,
কাকে ডেকে বলবে- আমায় টেনে তোলো!
তবুও পাংশু চোখে একটা অনিশ্চিত বিশ্বাস-
আমরা আবার বাঁচবো।
গণ-কবরের ভেতর থেকে এক যোদ্ধার নতজানু আফসোস-
এই মানচিত্র তো আমি আঁকিনি!