১৬০
বিস্মৃত পল্লীতে, একা, হেঁটেছি বিস্তর।
চিরজীবী জোছনার ঘন ইন্দ্রজাল -
হয়তো এখনো খেলে! হাওয়ায় মাতাল-
উত্তরী ছাড়েনি তার গ্রীবার আদর।
সহস্র আলোকবর্ষ দূর অমরার-
নিসর্গের দেবাশিষে রাঙিয়ে কপাল,
হয়েছিল স্বয়ম্বরা, ভরেছে আঁচল,
চোখে তার আগামীর অমৃত নহর।
এখনো আসে চন্দ্রিকা - বীথিকার তলে,
বাঁশের পাতার ফাঁকে বদন লুকায়;
মুছে যাওয়া স্বপ্ন-সাজ দিয়ে যাবে বলে।
কুহকের কুহেলিকা ভাসে হিমাচলে,-
রবির সোহাগ মাখা তুষার ধবলে,
ঝর্ণায় রাখনি চোখ হিমের নেশায়।
১৬১
যেখানে হঠাৎ কোন নূপুর-নিস্বনে,-
সচকিত রাখালের বাঁশি থেমে যায়;
সেখানে বিধুর সুর, কে জেনেছে, হায়!
কালের জঠরে বাজে নীরবে, নির্জনে!
পল্লীর পল্বলে ফোটা কলমি-প্রসূনে;-
এখনো ভ্রমর রচে নতুন অধ্যায়,
হয়তো, এখনো ছলে গাগরি ভাসায়;
রাধিকার মতো কোন ষোড়শীর কনে।
নিষ্ঠুর পৌষালী এসে হৃদয় অতলে, -
সবুজের বুকে আঁকে জরদা বরণ,
তবুও বসন্ত আসে, শ্রাবণ, ভাদর।
কিশোরী এখনো বাঁধে বেণী জবা ফুলে,
সোনালী ফসলে আসে এখনো অঘ্রান,
বিস্মৃত পল্লীতে আজো - আমি নিরন্তর।
শব্দ ব্যাখ্যাঃ
উত্তরী > উত্তরীয়/ওড়না অর্থে
চন্দ্রিকা > জ্যোৎস্না
কুহক > মায়াজাল
নিস্বন > ধ্বনি/শব্দ
(পেত্রার্কীয় সনেট, অক্ষরবৃত্ত ছন্দ, পর্ব বিন্যাস: ৮+৬)