কবি, কিন্তু চাষি তো আমিও। যে চাষা কাঁধে জোয়াল নিয়ে বলদ জোড়ার সাথে কথা বলার ফাঁকে নিজের সাথে অনেক কথা বলছে তার সাথে তফাত এই যে সে শস্য চাষ করে আর আমি করি শব্দ চাষ।
কত অপেক্ষায় প্রথম বৃষ্টি ঝরল মধ্য বসন্তে। তার ফোটায় শরীর ভেজাতে কত কাব্য কথার জন্ম হল, অকবিরাও আবেগে ভাসল, নতুন কিছু কবিরও জন্ম হল এক পশলা।
ব্যাস তাতেই হয়ত উত্তেজনা প্রশমিত হল। কিন্তু তফাত চাষার মনে। কত শত ভাবনা আয়ত পাথার আর শস্য ক্ষেত ঘিরে। ভেজার বাসনা নয় বরং ভেজানোর।
শিলা বৃষ্টির শিল হাতে নিয়ে আমি যখন আইস্ক্রিমের স্মৃতি নিয়ে মত্ত তখন চাষা ভাবছে আমের গুটি গুলো ঠিক আছে তো? বৃষ্টি যতটুকু হল তাতে ক্ষেতে দুদিন সেঁচ না দিলে বেশ কিছু বিদ্যুৎ অথবা ডিজেল খরচটা বাঁচবে।
কবি, কিন্তু চাষিও তো আমি। আমার শস্যক্ষেতে আমি দেশ প্রকৃতি প্রেম মানুষ ধর্ম কত কি চাষ করি আর চাষা - বলদ জোড়া সাথে করে তার ভাবনায় নিভৃতে বিড়বিড় করে ভাবে কি করে মানুষকে বাঁচানো যাবে! তাইতঃ
আমি শব্দের কথা ভাবি, সে শস্যের কথা ভাবে
আমি পাতার কথা ভাবি, সে পোকার কথা ভাবে
আমি বৃষ্টির কথা ভাবি সে সৃষ্টির কথা ভাবে
আমি কষ্টের কথা ভাবি, সে নষ্টের কথা ভাবে
আমি কবিতার কথা ভাবি, সে কুঁড়ির কথা ভাবে
তাই এবার প্রথম বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে হয়নি।
বাসে, ঢাকার পথে
১৪ মার্চ, ২০২১।