বয়স বেড়ে গেলে চুল দাড়ি পাকে
দাঁত নড়ে, পড়ে, চোখে লাগে চশমা,
দুই পা থেকে লাঠিতে হয় তিন পা
মেয়েকে বলি আমার কি দোষ মা?
এ তো মানব জীবন চক্রের ফের
তুইও ছোট কালে হাঁটতি চার পায়ে,
কখন যে বড় হলি মনে নেই ও সব
এখন ঢুঁ বেড়াস এ গাঁয়ে ও গাঁয়ে।
বাবা তোর বৃদ্ধ হয়েছে এ কথা সত্য
তুইও বড় হ'লি পারিনা নিতে কোলে,
এ যে কত বড় বুকে চাপা গূঢ় কষ্ট
মা হলে কখনও জানবি বয়স কালে।
বুড়োকালে স্বাস্থ্য বলতে হাসপাতাল
ডাক্তার নার্স আর গাদা গাদা ওষুধ,
রকমারি পরিক্ষা নিরিক্ষার ফল ছাড়া
ডাক্তারী আজ অকেজো এ বড় অদ্ভুত।
দেখি এখন পেট হয়েছে ডিস্পেনসারী
হাসপাতালের সিকবেড হয়েছে বিছানা,
দিনে রাতে সব খাবারই পথ্য এখন
যা খেতে চাই সবটাই যেন খেতে মানা।
বৃদ্ধকাল ভর করা নানান ওষুধ পথ্যে
এ কেমন জীবন চক্র দিলে হে বিধাতা?
কপাল কুঁচকানো চামড়ায় পড়েছে ভাঁজ
নিজের কাছে নিজেই এখন প্রেতাত্মা!
মেয়েকে বলিঃ মারে এইত আর ক'টা দিন
ডাক্তার হাসপাতাল সকলকে দেবো ছুটি,
মেয়ে অপলক তাকিয়ে থাকে কান্না চোখে
দৌড়ে গিয়ে বাইরে জড়ায় ঘরের খুঁটি।
মেয়ে কাঁদে আমি কাঁদি, কাঁদে বিধাতাও
খন্ডাবে কে জীবনচক্র এযে অমোঘ বিধান,
চন্দ্র সূর্য তারা দিন রাত্রিও কত সুশৃঙ্খল
শিশু-বৃদ্ধ, জন্ম-মৃত্যুই যেন এক স্রস্টার প্রমান।
২৭ জুলাই, ২০২১।